আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৩ অক্টোবর, ২০২৪

ইসরায়েলের অর্থনীতিতে চাপের পাহাড়

ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ ও ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা ইসরায়েলের অর্থনীতিতে চরম বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশটির শীর্ষস্থানীয় দৈনিক হারেৎজ সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে তৃতীয়বারের মতো ইসরায়েলের বাজেট ঘাটতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।

হারেৎজের প্রতিবেদন অনুসারে, হিজবুল্লাহ ও ইরানের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনা ইসরায়েলের অর্থনীতিতে ১০ থেকে ২০ বিলিয়ন শেকেল ব্যয় বৃদ্ধি করেছে, যা মার্কিন ডলারের হিসেবে ২.৬ বিলিয়ন থেকে ৫.২ বিলিয়ন ডলারের সমান।

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, এই অতিরিক্ত ব্যয়ের হিসাব করা হয়েছে কর আদায়ের সম্ভাব্য ক্ষতি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৮ বিলিয়ন শেকেল (৪.৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি) সাহায্য অনিশ্চিত থাকার আগেই।

গত ২ অক্টোবর, স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুয়ার্স ইসরায়েলের ঋণের রেটিং হ্রাসের ঘোষণা দেয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এর কয়েক দিন আগেই, মুডিজও একই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

এই প্রেক্ষাপটে, ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মে মাসে ২৫০ বিলিয়ন শেকেল (প্রায় ৬৬ বিলিয়ন ডলার) যুদ্ধজনিত ব্যয় বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়। এই অঙ্কের মধ্যে সামরিক ব্যয়, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল থেকে স্থানচ্যুত হওয়া হাজার হাজার ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের জন্য বাসস্থানের ব্যয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই পরিমাণ অর্থ ইসরায়েলের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ।

সকল কিছু বিবেচনায় আনলে বোঝা যাচ্ছে, যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যয় আরো বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে ইসরায়েলি সরকারের ওপর অর্থনৈতিক বোঝা আরো ভারী হবে।

সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে, গাজায় ইসরায়েলের লম্বা গণহত্যা এবং দেশটির ঋণের রেটিং হ্রাস নিয়ে ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী স্মোট্রিচ দাবি করেছিলেন যে অর্থনীতি চাপের মধ্যে থাকলেও এটি এখনো সুস্থ আছে। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের অর্থনীতি দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল যুদ্ধের বোঝা বহন করে চলেছে।’

তবে, ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর কার্নিট ফ্লাগ সিএনএনকে বলেছেন যে একটি তীব্র যুদ্ধ ‘অর্থনৈতিক কার্যকলাপ এবং বৃদ্ধির ওপর ভারী প্রভাব ফেলবে।’

এই যুদ্ধের কারণে গাজার অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে, যা একটি অর্থনৈতিক ও মানবিক দুর্যোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, গত মাসে প্রকাশিত একটি জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে পশ্চিম তীরে ‘দ্রুত এবং উদ্বেগজনক হারে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ কমে যাচ্ছে।’

এর আগে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এই বছর ইসরায়েলের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৩.৪% বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে জিডিপি বৃদ্ধির হার ১ থেকে ১.৯%-এর মধ্যে থাকতে পারে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

এ ছাড়া মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমাতে পারছে না, কারণ মজুরি বৃদ্ধি এবং যুদ্ধের জন্য সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতি আরো বেশি উসকে দিচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close