আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন নির্বাচনে তৃতীয়পক্ষ
ট্রাম্প-কমলার আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী জিল স্টেইন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর এক মাসও বাকি নেই। নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যে শুধুই নাম আসছে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসের। তবে তৃতীয়পক্ষ যে আরেকজন রয়েছেন, তার কথা খুব একটা আসে না মার্কিন ভোটারদের রাজনৈতিক চর্চায় কিংবা গণমাধ্যমের খবরে।
তৃতীয়পক্ষ হচ্ছেন, গ্রিন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইন। মার্কিন ভোটারদের প্রায় ১ শতাংশ ভোটের মালিক জিল স্টেইন কখনো আশাও করেন না যে, ভোটে জিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হয়ে যাবেন। তবে জিল স্টেইন ও তার দলের চাওয়া হচ্ছে, মার্কিন জনগণকে দুই দল- ডেমোক্রেট-রিপাবলিকের ঘূর্ণাবর্তের বাইরে নিয়ে আসা।
এবার অবশ্য জিল স্টেইনকে চেপে ধরেছে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটরা। জো বাইডেন-কমলা হ্যারিসের দলের অভিযোগ, জিল স্টেইন আসলে ভোট কাটা প্রার্থী। আর দলটি ভোট কাটে ট্রাম্পের পক্ষে। জিলকে ভোট দেওয়া মানে ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া।
গ্রিন পার্টির প্রার্থীকে নিন্দাবাদ করে ডেমোক্র্যাটরা একটি বিজ্ঞাপনও সম্প্রচার করছে। উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ার সুইং স্টেটগুলোতে টেলিভিশনে দেখানো হচ্ছে বিজ্ঞাপনটি।
ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির (ডিএনসি) নির্বাহী শাখার ওই টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে গ্রিন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইনকে আক্রমণ করে বলা হচ্ছে, ‘২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জেতার নেপথ্যে ছিলেন এই নারী। স্টেইনের পক্ষে একটি ভোট আসলেই ট্রাম্পের জন্য একটি ভোট।
ভিডিওটিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি মন্তব্যও রয়েছে। ট্রাম্প বলছেন, ‘জিল স্টেইন? আমি তাকে খুব পছন্দ করি।’
ডেমোক্র্যাটদের এ ধরনের বিজ্ঞাপন মার্কিন নির্বাচনী ইতিহাসে তৃতীয়পক্ষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রথম আক্রমণ। এই আক্রমণ ইঙ্গিত দিচ্ছে, ডেমোক্র্যাটরা তাদের প্রতিটি ভোটের জন্য উদ্বিগ্ন। কেননা, তারা ট্রাম্প-কমলার লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হচ্ছে বলেই আশঙ্কা করছেন।
জিল স্টেইনের দল বিগত নির্বাচনগুলোতে প্রায় ১ শতাংশ ভোট পেয়েছে। কিন্তু কিছু ব্যাটেলগ্রাউন্ড রাজ্যের ক্ষেত্রে এই সামান্য ভোটও বিরাট পার্থক্য তৈরি করতে পারে। যেমন, ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গ্রিন পার্টির প্রার্থী রাল্ফ নাদের ফ্লোরিডায় ৯৭ হাজার ৪২১ ভোট পেয়েছিলেন। আর এই ভোটের প্রভাবে ওই রাজ্যে শেষ পর্যন্ত জিতে গিয়েছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। আর সেবার তিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন মাত্র ৫৩৭ ভোটের ব্যবধানে।
সেজন্যই মূলত তৃতীয় পক্ষের প্রার্থীদের এই ভোটপ্রাপ্তির প্রভাবের জন্য দীর্ঘকাল ধরে তাদের দোষারোপ করা হচ্ছে। আর এবার তো ট্রাম্প ও কমলারএই ক্ষুর-পাতলা অর্থাৎ চরম হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে একটি ভোটও খুবই দামি।
এদিকে তৃতীয়পক্ষের প্রার্থী ও সমর্থকরা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে চলেছেন। তাদের যুক্তি, তারা একটি দ্বিদলীয় ব্যবস্থার বিভাজনকে মৌলিকভাবে ভেঙে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছেন এবং ভোটারদের একটি বৃহত্তর পছন্দের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে রাল্ফ নাদের বলেছেন, ঐতিহাসিকভাবে, একটি ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতির ভোটে তৃতীয় পক্ষের কখনোই জেতার সুযোগ নেই। বরং আমাদের নতুন এজেন্ডা রয়েছে।
নাদের বলেন, বিষয়টি হচ্ছে, এই নির্বাচনে শুধু দুটি পছন্দ, রিপাবলিকান অথবা ডেমোক্র্যাট। তারা আসলে একই ধরনের। এই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
নাদের বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক না হলে সেখানে কোনো গণতন্ত্রই নেই।
"