আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইসরায়েলি হামলায় ভূমিকম্পের মতো কাঁপল বৈরুত, ঝরল ২২ প্রাণ
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের কেন্দ্রস্থলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২২ জন নিহত ও ১১৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর বিবিসির।
বিবিসির তাদের সংবাদকর্মীরা শিয়া অধ্যুষিত রাজধানীর বাচৌরা এলাকায় বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। ঘটনাস্থলে ধ্বংসস্তূপ সরাতে দেখা গেছে উদ্ধারকারীদের। অ্যাম্বুলেন্সে করে আহত অনেককে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহর শ্যালক ও সশস্ত্র গোষ্ঠীটির ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা ওয়াফিক সাফা নিহত হয়েছেন। তবে হিজবুল্লাহর মিডিয়া অফিস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
বাচৌরার দুটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা নভেইরি ও বাস্তার আবাসিক ভবনগুলোতে ইসরায়েলি এ হামলা চালানো হয়।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বৈরুতে ব্যাপক হামলার পর তুলনামূলক শান্ত দুটি দিন পার করে ফের তারা এ হামলা চালাল।
এ বিষয়ে আগে থেকে কোনো সতর্কবার্তা ছিল না এবং ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীও (আইডিএফ) এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এ নিয়ে তৃতীয়বারের মত রাজধানীর দক্ষিণের শহরতলি দাহিয়েহতে বিমান হামলা চালাল ইসরায়েল। সেখানে তারা বারবার হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহ কমান্ডারদের হত্যা এবং যুদ্ধাস্ত্রের ভাণ্ডার ধ্বংস করছে।
স্থানীয় এক নারী জানান, বিস্ফোরণের সময় তিনি ঘটনাস্থলের পাশের ভবনে ছিলেন। যে ভবনে আঘাত হানা হয়েছে, সেটি পুরোপুরি আবাসিক এবং প্রায় চার-পাঁচ তলা উঁচু। বিস্ফোরণে তার এক আত্মীয় মাথায় আঘাত পেয়েছেন।
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে একটি ওয়াচ টাওয়ারে ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলাবর্ষণে ইন্দোনেশিয়ার দুই শান্তিরক্ষী আহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর বৈরুতে এ হামলা চালানো হয়।
লেবাননে জাতিসংঘের অন্তর্র্বতীকালীন বাহিনী (ইউনিফিল) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নাকুরায় জাতিসংঘের একটি ঘাঁটির এক পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে সরাসরি আঘাত হানা হয়েছে, তাতে শান্তিরক্ষীরা পড়ে যান।
দক্ষিণ লেবাননে বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা নিশ্চিতে ১৯৭৮ সালে শান্তিরক্ষা মিশন ‘ইউনিফিল’ গঠন করা হয়।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনী জাতিসংঘের অবস্থানে ‘বারবার হামলা’ চালিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে ইউনিফিলের আরও দুটি ঘাঁটিতে ইচ্ছাকৃতভাবে ক্যামেরা ও লাইট নিশানা করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
আইডিএফ বলছে, ঘাঁটির সদস্যদের ‘সুরক্ষিত স্থানে’ থাকার নির্দেশ দেওয়ার পর তাদের সেনারা ঘাঁটির আশপাশের এলাকা থেকে গুলি চালায়।
দুই শান্তিরক্ষী গুরুতর আহত না হলেও তাদের হাসপাতালে রাখার কথা জানিয়ে জাতিসংঘ বলেছে, শান্তিরক্ষীদের ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে হামলা আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।
আরেক ঘটনার বিবরণে বলা হচ্ছে, নাকুরার এক ঘাঁটিতে গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা। শান্তিরক্ষীরা যেখানে আশ্রয় নিয়েছিল, সেই বাঙ্কারের প্রবেশপথে আঘাত হানা হয়। তাতে যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
"