আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজায় প্রতি ৫৫ জনে একজনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এক বছরে নিহত ৪২০০০ ফিলিস্তিনি
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের হামলা এবং গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলার এক বছর পূর্তি ছিল সোমবার। গত বছরের ৭ অক্টোবর দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ এখনো চলছে। ২৩ লাখ বাসিন্দার এই উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এক বছরে নিহত হয়েছে অন্তত ৪১ হাজার ৯০৯ জন। জনসংখ্যার হিসেবে গাজার প্রতি ৫৫ জনের একজনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। খবর আল-জাজিরার।
ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় নিহত ব্যক্তিদের ৬৯ ভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ও শিশু ২৮ হাজার ১০২ জন। শিশু ১৬ হাজার ৭৫৬ জন। আর নারী ১১ হাজার ৩৪৬ জন।
এই এক বছরে ইসরায়েলের হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ৯৭ হাজার ১৬৬ ফিলিস্তিনি। গাজার মোট জনসংখ্যার হিসেবে ইসরায়েলের হামলায় প্রতি ২৩ জনের একজন আহত হয়েছে।
তবে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, শুধু হাসপাতালে আসা হতাহত ব্যক্তিদের ভিত্তিতেই গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য দিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর বিরামহীন হামলার কারণে যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় অনেক মরদেহ হাসপাতাল পর্যন্ত আসেনি। এ ছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ও স্থাপনার ধ্বংসস্তূপের নিচে ১০ হাজারের বেশি মরদেহ পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা এবং পর্যাপ্ত উদ্ধার সরঞ্জাম না থাকায় এসব মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণ সীমান্তবর্তী এলাকায় নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ৩০০ সেনাসহ প্রায় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে প্রায় ২৫০ জনকে।
এদিকে কয়েকটি হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের পর গত এক বছরে সাতটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। এসব গণকবরে ৫২০ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে।
গত এক বছরে গাজা উপত্যকায় ৪০ হাজারের বেশি স্থাপনা লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। তাদের দাবি, একই সময় ৪ হাজার ৭০০ সুড়ঙ্গ ধ্বংস করা হয়েছে।
সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প- প্রত্যেকেই ইসরায়েলে হামাসের হামলার বর্ষপূর্তি পালন করেছেন। আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে এবং ট্রাম্প রিপাবলিকান দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইসরায়েলি সেনারা লেবাননের দক্ষিণ দিকে যাচ্ছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, হিজবুল্লাহদের ব্যবহৃত সীমান্ত এলাকাগুলো ফাঁকা করাটাই তাদের লক্ষ্য। লেবাননের খুব ভেতরে তাদের যাওয়ার ইচ্ছা নেই।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী আরো বলেছে, তাদের বিমানবাহিনী লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহকে লক্ষ্যবস্তু করে ব্যাপক বোমা হামলা চালাচ্ছে। লেবাননে আরো দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার কথাও জানিয়েছে তারা। এর মধ্য দিয়ে লেবাননের অভ্যন্তরে নিহত ইসরায়েলি সেনার সংখ্যা ১১-তে দাঁড়িয়েছে।
"