আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ইরাকে মার্কিন মিশন শেষ হবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২৫০০ সেনা ইরাকে ও প্রতিবেশী সিরিয়ায় আরো ৯০০ সেনা রয়েছে

ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক সামরিক মিশন ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে শেষ হবে বলে শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে ওয়াশিংটন ও বাগদাদ।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ মিশন শেষ হওয়ার পর দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক একটি দ্বিপক্ষীয় অংশীদারত্বে রূপান্তরিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২৫০০ সেনা ইরাকে ও প্রতিবেশী সিরিয়ায় আরো ৯০০ সেনা আছে। দেশ দুটিতে তাণ্ডব ঘটানো জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ২০১৪ সালে এ সামরিক জোট গঠন করা হয়েছিল।

ওই যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কতোজন সেনা ইরাক ছেড়ে যাবে এবং কোনো ঘাঁটিগুলো থেকে যাবে এসবের বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

শুক্রবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ঊর্ধ্বতন এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, এই পদক্ষেপ কোনো প্রত্যাহার নয়। রয়টার্স জানিয়েছে, বহুজাতিক বাহিনীটির কোনো সেনা আদৌ ইরাক ছাড়বেন কি না, তা জানাতেও রাজি হননি ওই কর্মকর্তা।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই পদক্ষেপ একটি প্রত্যাহার না। এটি একটি রূপান্তর। এটি একটি বহুজাতিক সামরিক মিশন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরাকের মধ্যে বিস্তৃত দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সম্পর্কে রূপান্তর।’

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী শিয়া আল সুদানি এই পরিবর্তনের বিষয়ে জানুয়ারিতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কথা বলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রশংসা করলেও মার্কিন সেনারা অস্থিরতার একটি উৎস হয়ে উঠেছে, প্রায়ই তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে আর তারাও প্রায়ই ইরাকের সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের সমন্বয় ছাড়াই পাল্টা হামলা চালিয়ে জবাব দিচ্ছে।

রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, দুই দেশের মধ্যে এ নিয়ে হতে যাওয়া চুক্তি অনুযায়ী ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে কয়েকশ মার্কিন সেনাকে ইরাক ছাড়তে দেখা যেতে পারে আর বাকিরা ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ দেশটি ছাড়তে পারেন। কিন্তু নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, জোট বাহিনীর সব সেনা ইরকের পশ্চিমাঞ্চলীয় আনবার প্রদেশের আইন আল-আসাদ বিমান ঘাঁটি ছেড়ে যাবেন এবং এবং ২০২৫ এর সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাগদাদে তাদের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়ভাবে কমিয়ে আনবে।

মার্কিন সেনা ও জোট বাহিনীর অন্য দেশের সেনারা ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের প্রধান শহর আরবিলে থেকে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন ও ইতালিসহ কয়েকটি দেশের কয়েক শ সেনা এই জোট বাহিনীটিতে আছেন।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মিশন তাদের কাজ চালিয়ে যাবে।

ইরাকে মার্কিন বাহিনীর পরিবর্তিত ভূমিকা একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে আসবে। তারা প্রাথমিকভাবে আইএসের তৎপরতার দিকে মনোযোগ নিবদ্ধ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি ওই অঞ্চলে ইরানের প্রভাবের বিরুদ্ধে কৌশলগত অবস্থান হিসেবেও কাজ করবে বলে স্বীকার করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে আঞ্চলিক সংঘাত বৃদ্ধির মধ্যে মার্কিন বাহিনীর এই অবস্থানের গুরুত্ব ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া রকেট ও ড্রোনগুলো ইরাকে থাকা মার্কিন বাহিনী গুলি করে ভূপাতিত করেছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এই চুক্তি প্রধানমন্ত্রী সুদানির জন্যও একটি সম্ভাব্য রাজনৈতিক বিজয় সূচিত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে তিনি ওয়াশিংটন ও তেহরান, উভয় মিত্রের মধ্যে ইরাকের অবস্থানের ভারসাম্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close