আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

পশ্চিমতীরে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সংঘর্ষ

অভিযানে বেসামরিক, যোদ্ধাসহ এ পর্যন্ত অন্তত ২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে

অধিকৃত পশ্চিমতীরের জেনিন শহরে ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানের মধ্যে শনিবার ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সংঘর্ষ বেধে যায়।

শুক্রবার সন্ধ্যায় পৃথক দুটি ঘটনা ঘটার পর ইসরায়েলি সেনারা ইহুদি বসতিগুলোর চারপাশের এলাকায় তল্লাশি চালাতে শুরু করে। জেনিনে মাথার ওপর ড্রোন ও হেলিকপ্টারগুলোকে চক্কর কাটতে দেখা যায় আর তখন শহরটিতে বিক্ষিপ্ত গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল।

বুধবার থেকেই পশ্চিমতীরে অভিযান চালাচ্ছে শত শত ইসরায়েলি সেনা। এটি কয়েক মাসের মধ্যে অধিকৃত অঞ্চলটিতে তাদের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান। তাদের নাগরিকদের ইরান সমর্থিত ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে এ অভিযান শুরু করা হয়েছে বলে দাবি ইসরায়েলের, কিন্তু আন্তর্জাতিক বহু পক্ষ এ অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।

অভিযানটি শুরু হওয়ার পর থেকে বেসামরিক ও যোদ্ধাসহ এ পর্যন্ত অন্তত ২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে শারীরিক প্রতিবন্ধী এক ফিলিস্তিনিও আছেন বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা। শনিবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, পশ্চিম তীরে লড়াই চলাকালে তাদের এক সেনা নিহত হয়েছেন।

এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, জেনিন ও সংলগ্ন শরণার্থী শিবিরে দীর্ঘদিন ধরেই একটি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর যোদ্ধাদের শক্ত অবস্থান আছে, এখানে ইসরায়েলি সেনারা তাদের সঙ্গে লড়াই করছে।

১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রের সৃষ্টিকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় নিজ ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়া ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো জেনিনের ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থীশিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়ে আছে। ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, শনিবার মাথায় গুলিবিদ্ধ এক শিশুকে জেনিনের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গাজায় প্রায় ১১ মাস ধরে চলা যুদ্ধের প্রভাবে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘাত অনেক বেড়ে গেছে। শুক্রবার রাতে ইসরায়েলি বাহিনী জানায়, পশ্চিমতীরের ইহুদি বসতি গাস এটজায়নে পৃথক দুটি ঘটনায় দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

প্রথম ঘটনায় এক পেট্রল পাম্পে একটি গাড়ি বিস্ফোরিত হয় যাকে ‘গাড়ি বোমা হামলা’ বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তারা জানিয়েছে, ওই গাড়ি থেকে এক ব্যক্তি নেমে সেনাদের ওপর হামলার চেষ্টা করলে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, দ্বিতীয় ঘটনায় একটি গাড়ি নিরাপত্তারক্ষীদের ধাক্কা দিয়ে কারমেই টিজুর আবাসিক এলাকায় প্রবেশ করার চেষ্টা করলে চালককে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিরাপত্তাবাহিনী গাড়িটিকে ধাওয়া করলে সেটি দুর্ঘটনায় পড়লে চালককে গুলি করা হয়। গাড়িটি থেকে একটি বিস্ফোরক ডিভাইস পাওয়ার পর সেটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এই দুই মৃত্যুর ঘটনা ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, তবে তারা কীভাবে তাদের মৃত্যু ঘটেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। এ ঘটনাগুলোর পর আশপাশে তল্লাশি চালাতে শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। নিহত দুইজন যেখানে থেকে এসেছিলেন সেই হেবরনেও অভিযান চালায় ইসরায়েলিরা। পশ্চিমতীরের এ দুই ঘটনাকে ‘বীরত্বপূর্ণ অভিযান’ অভিযান হিসেবে বর্ণনা করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস, কিন্তু সরাসরি এসব হামলার দায় স্বীকার করেনি তারা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close