আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বাইডেনের রূপরেখার ভিত্তিতেই গাজায় যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
গাজায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে রূপরেখা দিয়েছিলেন, সেই অনুযায়ী আলোচনা চালিয়ে যেতে চায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। নতুন কোনো শর্ত বা ফের নতুন দফায় আলোচনায় তারা রাজি নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে মধ্যস্থতাকারীদের। খবর বিবিসি ও আল-জাজিরার।
গাজায় দীর্ঘ ১০ মাসের বেশি সময় ধরে নির্বিচার হামলা, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে অন্তত ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছে আরো ৯২ হাজারের বেশি।
ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার মধ্যেই কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলছিল গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির আলোচনা। গত মার্চে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুদ্ধবিরতির যে রূপরেখা দিয়েছিলেন, মূলত তার ভিত্তিতেই ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এ আলোচনা চলছিল।
হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া ইরানে অবস্থানকালে ইসরায়েলের চোরাগোপ্তা হামলায় নিহত হওয়ার পর গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে দুপক্ষের মধ্যে আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। হানিয়া হত্যাকাণ্ডের জের ধরে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধংদেহী উত্তেজনা আরো চরমে পৌঁছে।
এমন পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে ফের যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করতে দুপক্ষকে তাগিদ দিয়েছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীরা আগামী ১৫ আগস্ট যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তিতে আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য ইসরায়েল ও হামাসকে অনুরোধ জানিয়ে পাঠিয়েছে।
একটি যৌথ বিবৃতিতে মধ্যস্থতাকারীরা বলেন, ১৫ আগস্ট দোহা বা কায়রোতে আলোচনা হতে পারে। বিলম্ব না করে অবশিষ্ট যেকোনো ফাঁকফোকর বন্ধ করে যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে।
এদিকে ইসরায়েল আলোচনার শুরু করতে নতুন কিছু শর্তের কথা বলছে। গত বৃহস্পতিবার তারা জানিয়েছে, তারা বৈঠকে অংশ নিতে আলোচকদের একটি দল পাঠাবে।
ইসরায়েলি নতুন শর্তে রয়েছে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের গাজার উত্তর সিটিতে ফিরে আসার সময় তাদের স্ক্রিন করার সুযোগ দিতে হবে, সেই সঙ্গে মিসরের সীমান্তবর্তী ফিলাডেলফি করিডরের নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে থাকতে হবে।
তবে রবিবার হামাস জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে নতুন কোনো দফা বা শর্ত নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই, পূর্ববর্তী পরিকল্পনার ভিত্তিতেই আলোচনা শুরু হওয়া উচিত।
হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৩১ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বর্ণিত নীতিগুলোর ওপর ভিত্তি করে যে রূপরেখা প্রস্তুত ছিল, সে অনুযায়ীই আলোচনা হতে হবে। বাইডেনের প্রস্তাব অনুযায়ী একটি সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি শুরু হবে জিম্মিদের পর্যায়ক্রমিক মুক্তির মাধ্যমে।
হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়, মধ্যস্থতাকারীদের উচিত আরো কোনো দফা আলোচনা বা নতুন প্রস্তাবের অনুসরণ না করে দখলদারদের (ইসরায়েল) ওপর চাপ প্রয়োগ
করা, যা দখলদারের আগ্রাসন এবং গাজার জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়ে যাওয়া বন্ধ করবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ঢুকে হামলা চালালে, এক দিনেই ১১৩৯ ইসরায়েলি নিহত হয়। এ সময় আরো ২৪০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে আসে হামাস। প্রতিশোধ নিতে সেদিন থেকেই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নির্বিচার বিমান হামলা ও স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।
"