আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজায় ইসরায়েলি হামলার ১০ মাস পূর্ণ, নিহত ৩৯৬২৩
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার ১০ মাস পার হচ্ছে গতকাল মঙ্গলবার। আগের দিন সোমবার ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় আরো ৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি বাহিনী ধরে নিয়ে গিয়েছিল, এমন ৯০ জনের লাশ ফেরত দিয়েছে তারা। খবর আল-জাজিরার।
গাজার কেন্দ্রস্থল তাল আল হাওয়া, দক্ষিণের খান ইউনিস, মধ্য গাজার জাওয়াইদাসহ বিভিন্ন স্থানে সোমবার দিন-রাতে বিমান হামলা চালিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার সিটির পশ্চিম উপকূলের সাগর থেকেও বোমা হামলা চালিয়ে ইসরায়েলি নৌবাহিনী।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় গাজা জুড়ে অন্তত ৪০ জন নিহত ও ৭১ জন আহত হয়েছে। এ নিয়ে গত ১০ মাসে ৩৯ হাজার ৬২৩ জন নিহত এবং ৯১ হাজার ৪৬৯ জন আহত হয়েছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি বলছে, ৯০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ফিলিস্তিনিদের গলিত মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং কয়েক মাস ধরে ইসরায়েলে আটকে রাখা হয়েছিল। লাশগুলো একটি গণকবরে সমাহিত করা হয়েছে বলে জানায় গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি।
এদিকে গাজা যুদ্ধ পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে- এমন আশঙ্কায় উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।
মূলত ইরানে ইসরায়েলি গুপ্ত হামলায় হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া নিহতের পর থেকেই ওই উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ বিষয়ে রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ মন্ত্রী সের্গেই শোইগু তেহরানে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন।
ইসরায়েলে হামলা না করতে ইরানকে বোঝানোর চেষ্টা জর্ডানের : হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে জর্ডান। এ লক্ষ্যে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি সম্প্রতি ইরান সফর করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতেই সাফাদি তেহরানে গেছেন বলে মত বিশেষজ্ঞদের। গত দুই দশকের মধ্যে ইরানে এটিই জর্ডানের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর।
ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। সেখানে ব্যাপক সংঘাতের আশঙ্কা বেড়েছে। জর্ডানকে মূলত পশ্চিমা মিত্রদেশ হিসেবে দেখা হয়। তবে সেখানে অনেক ফিলিস্তিনি জনগণ রয়েছে। গাজা সংঘাতের মুখে জর্ডান এত দিন ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে। এখন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার অভ্যন্তরীণ চাপে রয়েছে জর্ডান কর্তৃপক্ষ। গত এপ্রিলে ইসরায়েলে ইরান যখন হামলা করেছিল, তখন ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে সাহায্য করছিল জর্ডান। কিন্তু জনগণ বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। জনগণের ক্ষোভের মুখে পড়েছে সরকার।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সমর্থন দেওয়ায় জর্ডানে ব্যাপক বিক্ষোভ হচ্ছে। হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় জর্ডানের পক্ষ থেকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ জানানো হয়েছে। জর্ডান বলেছে, এটা উসকানিমূলক অপরাধ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
"