প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৭ নভেম্বর, ২০২৩

মিয়ানমার-মিজোরাম সীমান্ত ক্রসিং দখল নিয়েছে বিদ্রোহীরা

সামরিক বাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে দুই দিনের যুদ্ধ শেষে মিয়ানমার ও ভারতের মিজোরাম রাজ্যের একটি সীমান্ত ক্রসিংয়ের দখল নিয়েছে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী তিন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। সীমান্ত পথটির অবস্থান মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ চীনে।

যে তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী সীমান্ত পথটি দখল করেছে সেগুলো হলো চিনল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্স (পিডিএফ) এবং চীন ন্যাশনাল আর্মি (সিএনএ)। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সিডিএফ বলেছে, শনি ও রবিবার সেনা বাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে যুদ্ধ শেষে এই সীমান্ত পথটির দখল নেওয়া সম্ভব হয়েছে। মিজোরামের সঙ্গে চীনের অবশ্য এটাই একমাত্র সীমান্ত পথ নয়, তবে এ পথটি গুরুত্বপূর্ণ। শনিবার যুদ্ধ শুরুর পর জীবন বাঁচাতে মিজোরামে পালিয়ে গিয়েছিলেন সীমান্তবর্তী বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষ।

সোমবার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের অধিকাংশ ফিরেও এসেছেন। তবে সেদিন সীমান্ত পেরিয়ে মিজোরাম পালিয়ে গেছেন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অন্তত ৪৩ জন সদস্য। সীমান্ত পথটিতে নিজেদের পতাকা টাঙিয়েছে সিডিএফ।

এদিকে মঙ্গলবার যেদিন বিবৃতি দিয়েছে চিনল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স, সেদিনই মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ রাখাইনে অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন ১০ জন সেনা ও ২৮ জন পুলিশ সদস্য।

এর আগে আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে মিয়ানমার ও চীনের মধ্যকার একটি সীমান্তপথের দখল নিয়েছিল জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীরা। সীমান্তপথটি মিয়ানমারের শান প্রদেশে অবস্থিত। শানের সঙ্গে অবশ্য লাওস এবং থাইল্যান্ডেরও সীমান্ত রয়েছে। ক্ষমতাসীন জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন অবশ্য মঙ্গলবার এক তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্যকে ‘প্রোপাগান্ডা’ বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, তারা পুরো দেশকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে এবং এ কারণেই এসব প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।

গত অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে বেশ কয়েকটি জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীগুলোর সবই দেশটির জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (নাগ) সদস্য। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এই যুদ্ধের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন ১০২৭’। ইতিমধ্যে মিয়ানমারের দুটি সীমান্ত পথ, বেশ কয়েকটি শহর এবং শতাধিক সেনা ছাউনির দখল নিয়ে ফেলেছে বিদ্রোহীরা।

২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় পেয়ে সরকার গঠন করেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। কিন্তু সেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। দেশটির তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং সেই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ক্ষমতা দখলের পর এই প্রথম বড় ধরনের পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে জান্তা। সূত্র : রয়টার্স।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close