প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
গাজায় মরদেহ খাচ্ছে কুকুর নেই দাফনের জায়গা
* সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা * বিশ্বকে এগিয়ে আসার আহ্বান হামাসের
ফিলিস্তিনের গাজায় আল-শিফা হাসপাতালের ভেতরে ১৭৯ জনকে গণকবরে দাফন করা হয়েছিল। এর পরও ডজনখানেক মরদেহ পড়ে রয়েছে। এসব দাফনের আর জায়গা নেই। এর সঙ্গে প্রতিক্ষণে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন মরদেহ। হাসপাতালের মর্গও ভর্তি। বাধ্য হয়ে এবার মরদেহ রাখতে হচ্ছে হাসপাতালের উঠানে। সেখানে কুকুর সেসব খাচ্ছে। দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির চিত্র উঠে এসেছে।
এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বরাতেও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। সংস্থাটি জানায়, জায়গা অথবা সুযোগের অভাবে মরদেহ দাফন করতে না পারায় সেগুলোতে পচন ধরছে। এভাবে আরো কিছুদিন গেলে মরদেহ থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে নতুন বিপর্যয় দেখা দেবে। ডব্লিউএইচওর মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমায়ার জানিয়েছেন, হাসপাতালের আশপাশে মৃতদেহ আছে। সেগুলো নজরদারি করা যাচ্ছে না। কবর দেওয়া যাচ্ছে না। এমনকি কোনো মর্গেও নেওয়া যাচ্ছে না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মুনির আল-বুর্শ সোমবার সকালে আল-জাজিরাকে বলেছেন, রাস্তার কুকুররা আল-শিফা হাসপাতালের উঠানে বেসামরিক লোকদের মরদেহ খাচ্ছে। কারণ, বোমা হামলার মধ্যে মরদেহ কবর দেওয়া সম্ভব হয়নি।
হাসপাতালটির প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডাক্তার আহমেদ মুখাল্লাতি বলেন, সুবিধার অভাবে বেশ কিছু শিশু ইতিমধ্যে মারা গেছে। জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার ফলে শিশুদের মৃত্যুঝুঁকি আরো বাড়ছে। লাশগুলো সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য রোগের বড় উৎস হবে।
হাসপাতালের ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের (এমএসএফ) প্রতিনিধিত্বকারী একজন সার্জন একই উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, পরিস্থিতি খুবই খারাপ। হাসপাতালটিতে ৬০০ রোগী এবং ৩৭ শিশু রয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ, পানি ও খাবার কিছুই নেই। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভেন্টিলেটর না থাকলে মানুষ মারা যাবে। একজন স্থানীয় সাংবাদিক বলেছেন, হাসপাতালের সর্বত্র পচা লাশের দুর্গন্ধ। হাসপাতালের এক সার্জন বলেছেন, এখনকার পরিস্থিতি অমানবিক। আমাদের বিদ্যুৎ নেই। পানি নেই। খাবার নেই।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফা ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলি সেনারা। হাসপাতালের প্রধান প্রধান গেটে ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান নিয়ে অবস্থান নিয়েছে নেতানিয়াহু বাহিনী। হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ বা বাইরে বের হতে গেলেই ইসরায়েলি স্নাইপাররা গুলি ছুড়ছে। এতে হাসপাতালের ভেতরে অবরুদ্ধ অবস্থায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন আহতরা।
আল-শিফা হাসপাতালে অভিযান শুরু : এদিকে, অবরুদ্ধ গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফায় ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। হাসপাতালে ঢুকে হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে তারা। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়া বলেন, ওয়াশিংটনের কাছে তথ্য রয়েছে হামাস আল-শিফাসহ গাজার হাসপাতালগুলোতে অবস্থান করছে। এ কথা বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শুরু হয়েছে অভিযান। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফায় ট্যাংক ও বুলডোজার নিয়ে প্রবেশ করেছে ইসরায়েলি সেনারা।
"