প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৯ জুন, ২০২৩

সামরিক হামলায় বাঁধে ধস

ইউক্রেনে পানিতে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল

* পানির ভয়াবহ তোড় দীর্ঘস্থায়ী বন্যার আশঙ্কা * ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ

দিনিপ্রো নদীর একটি বাঁধ সামরিক হামলায় গুঁড়িয়ে যাওয়ার পর রাশিয়া ও ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। রুশ সেনাবাহিনী এই বাঁধ ধ্বংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ আছে। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পানির তোড়ে এলাকাগুলোয় বন্যার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। এই বাঁধ ধসের ঘটনার মারাত্মক ও সুদূরপ্রসারী পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক প্রধান।

বার্তা সংস্থাগুলো বৃহস্পতিবার (৮ জুন) জানায়, ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানি ছড়িয়ে পড়ে দীর্ঘস্থায়ী বন্যার ঝুঁকি তৈরি করেছে। ফলে হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। এ ঘটনার জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরকে দায়ী করেছে।

ইউক্রেনকে দায়ী করে ক্রেমলিন বলেছে, নিজেদের শুরু করা বড় ধরনের পাল্টা আক্রমণ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টায় তারা এটা করেছে। ইউক্রেনের ওই হামলা রাশিয়া ব্যর্থ করে দেওয়ার দাবি করেছে।

অন্যদিকে রাশিয়াকে দায়ী করে ইউক্রেন বলেছে, সোভিয়েত আমলের নোভা কাখোভা বাঁধ উড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সচেতনভাবে যুদ্ধাপরাধ করেছে রাশিয়া।

৩০ মিটার উঁচু, ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বাঁধটি ১৯৫৬ সালে দিনিপ্রো নদীর ওপর বানানো হয়েছিল। এই বাঁধের পানি একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের শক্তির উৎস ছিল।

এদিকে জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, ‘এই বাঁধের ভাঙন ঘরবাড়ি, খাদ্য, নিরাপদ পানি ও জীবিকার ক্ষতির মাধ্যমে দক্ষিণ ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের উভয় পাশের হাজার হাজার মানুষের জন্য মারাত্মক ও সুদূরপ্রসারী পরিণতি বয়ে আনবে। এই বিপর্যয়ের পুরো মাত্রা শুধু আসছে দিনগুলোতে পূর্ণভাবে বোঝা যাবে।

এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র জন কারবি বলেছেন, এই বন্যায় সম্ভবত ‘অনেকের মৃত্যু হয়েছে’।

ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের হিসাবে প্রায় ৪২ হাজার মানুষ বন্যার ঝুঁকিতে আছেন, যা বুধবার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে। এই বাঁধ থেকে উজানের দিকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে খেরসন শহরে মঙ্গলবার পানির স্তর ৩ দশমিক ৫ মিটার বেড়েছে, এতে প্লাস্টিকের ব্যাগে জিনিসপত্র নিয়ে বাসিন্দারা হাঁটুপানি ভেঙে ঘরবাড়ি থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

শহরটির বাসিন্দা ওকসানা (৫৩) বলেন, ‘সবকিছু পানিতে ডুবে গেছে। সব ফার্নিচার, ফ্রিজ, খাবার, ফুল পানিতে ভাসছে। কী করব বুঝতে পারছি না।’

প্রায় ৮০টি এলাকা বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছে। এসব এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে বাস, ট্রেন ও প্রাইভেট গাড়ি প্রস্তুত অবস্থায় রাখা হয়েছে। দিনিপ্রো নদীর রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত তীরের বন্যাকবলিত শহর নোভা কাখোভকার বাসিন্দারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কিছু মানুষ থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close