প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৭ জুন, ২০২৩

তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে সুদানে লুটপাট-অরাজকতা

উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘাত রাজধানী খার্তুমে তীব্র আকার ধারণ করেছে। সেখানে গোলাবর্ষণ এবং ভারী সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

এ ছাড়া আট সপ্তাহে পা দেওয়া এই লড়াইয়ের জেরে রাজধানী খার্তুমসহ অন্য এলাকায় লুটপাট ও অরাজকতাও ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার (৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার সুদানের রাজধানীতে গোলাবর্ষণ এবং ভারী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এ ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী সামরিক দলগুলোর মধ্যে সাত সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা এ সংঘর্ষের পর খার্তুম এবং দারফুরের পশ্চিমাঞ্চলে লুটপাট ও অরাজকতা ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।

রয়টার্স বলছে, সৌদি আরব এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এর আগে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করেছিল যুদ্ধরত উভয় পক্ষ। তবে গত শনিবার রাতে সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে লড়াই আরো তীব্রতর হয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল শুরু হওয়া এই যুদ্ধ সুদানের মধ্যে ১২ লাখেরও বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। এ ছাড়া আরো প্রায় ৪ লাখ মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে। অন্যদিকে রাজধানী খার্তুমেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই শহরটিতে অবশিষ্ট যেসব বাসিন্দা রয়েছেন তারা যুদ্ধ, বিমান হামলা এবং লুটপাটের শঙ্কায় রয়েছেন।

রয়টার্স বলছে, সোমবার বাসিন্দারা দেশটির রাজধানী খার্তুম এবং পার্শ্ববর্তী ওমদুরমান ও বাহরি শহরজুড়ে টানা দ্বিতীয় দিনের লড়াইয়ের কথা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, ওমদুরমানে স্থল সংঘর্ষের পাশাপাশি গোলাবর্ষণ হয়েছে এবং খার্তুমের পূর্বাঞ্চলে ও রাজধানীর দক্ষিণ প্রান্তেও তীব্র লড়াই হয়েছে। ৩৭ বছর বয়সি বাসিন্দা মোহাম্মদ সালেহ বলেন, ওমদুরমানের যেখানে আমরা বাস করি তার আশপাশে প্রতিদিনই প্রকাশ্যে লুটপাট করা হচ্ছে এবং তা প্রতিরোধ করার জন্য কেউ হস্তক্ষেপ করছে না। এ ছাড়া আমাদের চারপাশে সংঘর্ষ ও গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।

খার্তুমের বাসিন্দা ওয়ালিদ আদম বলেছেন, আরএসএফ সৈন্যরা রাজধানীজুড়ে আশপাশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং তারা পূর্ব খার্তুম সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে।

আর তারাই সেখানে ব্যাপকভাবে লুটপাট চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি রয়টার্সকে ফোনে বলেন, আপনি তাদের ঠিক আপনার সামনেই দেখতে পাচ্ছেন। তারা গাড়ি, অর্থ, সোনা- যা কিছু তারা হাতে পাচ্ছে তা নিয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি, তারা আমার সামনের রাস্তায়ও আসবে এবং এটি শুধু সময়ের ব্যাপার। আরএসএফ বলছে, তারা লুটপাটকারীদের গ্রেপ্তার করে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য কাজ করছে।

এদিকে চলমান এই যুদ্ধ সুদানের সুদূর পশ্চিমের দারফুর অঞ্চলেও অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। এ অঞ্চলটি অতীতের নানা সংঘাতের কারণে ইতিমধ্যেই ব্যাপক বাস্তুচ্যুতিতে ভুগছিল এবং সেখানে বেশ কটি শহর ও শহরের বাসিন্দারা আরব যাযাবর উপজাতিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মিলিশিয়াদের আক্রমণের খবর দিয়েছে।

রয়টার্স বলছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে নর্থ দারফুর প্রদেশের কুতুমে কমপক্ষে ৪০ জন নিহত এবং আরো কয়েক ডজন আহত হয়েছেন বলে অঞ্চলটি পর্যবেক্ষণকারী কর্মীরা জানিয়েছেন। বাসিন্দারা এসব এলাকায় ব্যাপক লুটপাট ও নিরাপত্তাহীনতার কথাও জানিয়েছেন। দারফুরে আরএসএফ শক্তির ঘাঁটি রয়েছে এবং সোমবার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে তারা। ওই ভিডিওতে আরএসএফ যোদ্ধাদের কুতুমে সেনা সদর দপ্তর দখল করতে দেখা যায়। তবে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close