প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৮ মে, ২০২৩

পিএমএলএনের যুব সমাবেশে মরিয়ম নওয়াজ

ইমরান খানের খেলা শেষ

পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে উচ্ছেদ করার জন্য এই হামলার ষড়যন্ত্র আগে থেকেই করেছিল পিটিআই এবং তার মাস্টারমাইন্ড হলেন ইমরান খান

পাকিস্তানের রাজনীতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির বৃহত্তম রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ।

দুই সপ্তাহ আগে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে সেনানিবাস ও সেনা দপ্তরে যে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, সেটিও পিটিআইয়ের পূর্বপরিকল্পিত ছিল বলে দাবি করেছেন তিনি। পাঞ্জাব প্রদেশের বেহারি জেলায় শুক্রবার (২৬ মে) পিএমএলএনের এক যুব সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে মরিয়ম বলেন, আপনার খেলা শেষ। কেউ আর পিটিআইয়ের টিকিটে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে না। জাতি আর ইমরান খান ও তার অনুসারীদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। ৯ মের হামলা কোনো স্বতঃস্ফূর্ত ঘটনা ছিল না। আগে থেকেই এই হামলার ছক করা হয়েছিল জামান পার্কে (লাহোরে ইমরান খানের বাসভবন ওই এলাকায়)।

গত ৯ মে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে পাকিস্তান জুড়ে বিক্ষোভ এবং সেনা স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগে পিটিআই নেতাকর্মী-সমর্থকদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পিটিআইয়ের শীর্ষ-মাঝারি ও তৃণমূলপর্যায়ের নেতাকর্মীরা একের পর এক দল ছাড়তে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত ৭০ জন নেতা পিটিআই থেকে সরে গেছেন।

সেদিকে ইঙ্গিত করে মরিয়ম নওয়াজ বলেন, নেতাকর্মীরা কখনো শেয়ালের সঙ্গে দাঁড়ায় না। আপনি দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন, এখন আপনাকে ছেড়ে লোকজন চলে যাচ্ছে।

ইমরান খানকে ৯ মে হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে মরিয়ম আরো বলেন, পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে উচ্ছেদ করার জন্য এই হামলার ষড়যন্ত্র আগে থেকেই করেছিল পিটিআই এবং তার মাস্টারমাইন্ড হলেন ইমরান খান। বেছে বেছে শুধু সরকারি ভবন ও সেনা দপ্তরগুলোতে হামলার ষড়যন্ত্র করেছিল পিটিআই। ইমরান নয়, আপনার নাম হওয়া উচিত ছিল ফিৎনা খান এবং পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ ফিৎনা থেকে মুক্তি চাইছে।

৯ মে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে নিহতদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে পিএমএলএনের এই শীর্ষ নেত্রী বলেন, ‘৯ মের সহিংসতায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের জন্য এখনো আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আজকের এই সভা আমি সেই হামলায় নিহতদের অভিভাবক, সন্তান ও স্ত্রীদের প্রতি উৎসর্গ করছি।’

সরকারের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা চান ইমরান খান

৯ মের বিক্ষোভে সামরিক বাহিনীর স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুরে সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তারে পাকিস্তান জুড়ে অভিযান এবং তার জেরে একের পর এক নেতাকর্মীর দলত্যাগে ব্যাপক চাপে থাকা ইমরান খান দেশের সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে সংলাপে বসতে চেয়েছেন।

ইউটিউব লাইভে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান বলেন, আমি (সরকারের সঙ্গে) আলোচনায় বসতে চাই এবং তা যত দ্রুত হয় ততই মঙ্গল। পাকিস্তান নৈরাজ্যের দিকে যাচ্ছে এবং বর্তমানে দেশে যা চলছে, তা কোনো সমাধান তো নয়ই, উল্টো দেশকে আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ের পর সামরিক বাহিনীর আশীর্বাদপুষ্ট হয়েই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন এককালের সফল ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান খান। কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তার দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং তার মধ্যেই গত বছর পার্লামেন্টের বিরোধী সদস্যদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন পিটিআই চেয়ারম্যান। ক্ষমতা হারানোর জন্য ইমরান খান বরাবরই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কয়েকজন জেনারেলকে দায়ী করেছেন।

গত ৯ মে আলোচিত আলকাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর তার দল পিটিআইয়ের নেতাকর্মীরা দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং সেই বিক্ষোভে পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন সেনানিবাস ও সেনা দপ্তরে হামলা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close