প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
তুরস্ক থেকে দেশে ফিরল সাড়ে ৫ লাখ সিরীয় উদ্বাস্তু
তুরস্কে আশ্রয় নেওয়া সিরীয় শরণার্থীদের মধ্যে ৫ লাখ ৫৩ হাজার তাদের মাতৃভূমির সন্ত্রাসমুক্ত এলাকায় ফিরে গেছেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৬ মে) সন্ধ্যায় এমনটি জানিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু।
এনটিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারে কাভুসোগলু বলেন, আমরা যে অঞ্চলগুলো সন্ত্রাসমুক্ত করেছি সেখানে ৫ লাখ ৫৩ হাজার সিরিয় শরণার্থীকে ফেরত পাঠিয়েছি। উত্তর সিরিয়ায় ২ লাখ ৪০ হাজার বাড়ি নির্মাণ করা হবে, যেখানে ১০ লাখ শরণার্থী বসবাস করতে পারবেন।
তিনি বলেন, আমরা সিরীয় নাগরিকদের শুধু নিরাপদ স্থানেই পাঠাতে চাই না, বরং (প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ) সরকার নিয়ন্ত্রিত স্থানেও পাঠাতে চাই। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
আরব লিগের সদস্যরাষ্ট্রগুলো সিরিয়ার শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো সতর্ক করে জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর অর্থ হলো, তাদের ভয়াবহ বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া।
সিরিয়া, ইরাক, জর্ডান, মিসর এবং সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনকে উৎসাহিত করতে গত মাসে একত্রে একটি পরিকল্পনা করেছেন বলে জানা গেছে। এ কারণেই শুক্রবার জেদ্দায় অনুষ্ঠিত আরব লিগের শীর্ষ সম্মেলনের আগে বেশির ভাগ আরব রাষ্ট্রই আসাদ সরকারকে সংস্থাটিতে ফিরিয়ে আনতে সম্মত হয়েছিল।
এর ফলে সিরিয়ার শাসক বাশার আল আসাদ এই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন এবং সেখানে বক্তৃতা করেন। কয়েকজন আরব রাষ্ট্রপ্রধান তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনাও জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে একটি সূত্র জানায়, জর্ডান প্রথম সিরিয়ার শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের প্রস্তাবটি করেছিল। বিষয়টি নিয়ে এখন সর্বোচ্চ স্তরে আলোচনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো যুদ্ধবিধ্বস্ত এবং দারিদ্র্যকবলিত সিরিয়ায় শরণার্থীদের সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাশার আল আসাদের সরকারের দমন-পীড়নের কারণে শরণার্থীদের নিরাপত্তা নিয়েও নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে এই গোষ্ঠীগুলো। ২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার লোক নিখোঁজ হয়েছে। আর এজন্য সিরিয়ার বর্তমান সরকারকে দায়ী করা হচ্ছে। তদুপরি সিরিয়ায় অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটির জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে।
এ ছাড়া যেসব শরণার্থী ইতিমধ্যেই সিরিয়ায় ফেরত গেছে তাদের অনেকেই সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা বা মিলিশিয়াদের হাতে নির্বিচারে আটক, জোরপূর্বক গুম, হয়রানি এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, আরব কূটনীতিকরা বলেছেন, শরণার্থী প্রত্যাবর্তন প্রকল্পের মাধ্যমে তারা দেশটির শাসনব্যবস্থার সংস্কারের প্রতি প্রেসিডেন্ট আসাদের আন্তরিকতা যাচাই করতে চান।
"