প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
অন্ধকারের পথে মার্কিন নেতৃত্ব
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, বিশ্ববাসী ততই দেশটির অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতির আরেকটি বড় পরিবর্তনের আশঙ্কায় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের ক্ষমতায় আসতে পারেন এবং আরেক দফা দেশটির গণতন্ত্র এবং বিশ্বরাজনীতিতে বিদ্যমান ভূমিকা হুমকিতে পড়তে পারে বলে ওয়াশিংটনের মিত্রদের মধ্যে উৎকণ্ঠা কাজ করছে।
রাশিয়া ও চীনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত নীতি সমর্থনে অধিকাংশ দেশরই উদাসীনতা আছে। গত দু-তিন দশকে মার্কিন প্রশাসন যেভাবে অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতিতে অদল-বদল করেছে, আগামী প্রশাসনও যে বিদ্যমাননীতি থেকে উল্টোপথে হাঁটবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
বুশ প্রশাসনের ‘সাম্রাজ্যবাদী নীতি’ থেকে ওবামার ‘প্রায়োগিক বাস্তবতার নীতি’, ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট শীর্ষক জাতীয়তাবাদ’ থেকে সবশেষ বাইডেনের ‘আমেরিকার স্বমূর্তিতে ফিরে আসার নীতি’ মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের পরিবর্তনশীল নীতিকেই তুলে ধরে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের নীতিতে স্থিতিশীলতা বিশ্বের জন্যই জরুরি। মস্কো ও বেইজিংয়ে কে ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে, সেটা নিয়ে বিশ্বনেতাদের উৎকণ্ঠায় না থাকলেও তেমন কিছু হবে না, তবে যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নির্বাচনে কে প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন, সে বিষয়ে বাস্তব কারণেই সবার ব্যাপক আগ্রহ থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস। এরই মধ্যে ট্রাম্প আগামী নির্বাচনে লড়বেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আর ডিস্যান্টিস আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রার্থিতার কথা ঘোষণা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ডেমোক্রেটিক দল থেকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচনে দাঁড়াবেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করার সময় তার বয়স হবে ৮২ বছর। ফলে বয়সের কারণে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত ইস্যু বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে।
বাইডেন এখন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদ এবং অর্থনীতি ভালোই সামলাচ্ছেন। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও সম্ভাব্য মন্দা আগামী নির্বাচনে তার সম্ভাবনা নড়বড়ে করে দিতে পারে। এ ছাড়া সম্প্রতি মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে দেশটির সিলভারগেট ক্যাপিটাল, সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংকের মতো কয়েকটি বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে পড়েছে।
২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক মন্দার পর এ ঘটনাকেই অভিহিত করা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ধস হিসেবে। ফলে বাইডেন প্রশাসন কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেন সেদিকেও অনেকের নজর থাকবে।
"