প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

সামরিক শাসনে ভুক্তভোগী মিয়ানমারের নাগরিকরা

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের জন্য ছিল ভিন্ন রকম একটি দিন। দেশটিতে এদিন আরও একবার নেমে আসে সামরিক শাসনের কালো থাবা। সেখানে ঘটে সামরিক অভ্যুত্থান। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় শান্তিতে নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চিসহ দেশটির অনেক রাজনৈতিক নেতাকে।

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের দুই বছর পূর্তি হয়েছে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি)। দেশটিতে মাঝের সময়টা বেশ উত্তাল কেটেছে। অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ দানা বেধে উঠেছে। সেই বিক্ষোভ দমনে সেনাবাহিনী দমন-পীড়ন চালিয়েছে। সেনা শাসকের অত্যাচারে অন্ধকার হয়ে গেছে অনেক নাগরিকের জীবন। খবর রয়টার্সের।

বিক্ষোভকারীদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সামরিক সরকার। মিয়ানমারের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ দমনে শক্তি প্রয়োগ করেছে সেনাবাহিনী। তাদের হাতে হাজারো মানুষের প্রাণ গেছে।

জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, সামরিক জান্তার দমন-পীড়নে মিয়ানমারে প্রায় ১২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭০ হাজার মানুষ দেশ ছেড়েছেন। এসব কারণে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলো। আনা হয়েছে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ।

কিন্তু এত কিছুর পরও ভাগ্য ফেরেনি মিয়ানমারবাসীর। তাদের গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা অধরাই রয়ে গেছে। বরং প্রায় প্রতিটি দিন তাদের কাটাতে হচ্ছে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়, প্রাণ নিয়ে সংশয়ে। গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার আকাঙ্খায় সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে নেমেছিলেন আয়ে চান। কিন্তু তার সেই চাওয়া এখনো পূরণ হয়নি। বরং গত বছর গুলিতে চিরতরে পা হারাতে হয়েছে তাকে। ২১ বছর বয়সী আয়ে চান বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার আগে একটি নুডলস তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। গণতন্ত্রকামীরা যখন হাতে অস্ত্র তুলে নেন, তখন ওই দলে যোগ দেন তিনিও। আয়ে জানান, তিনি শুরুতে বুঝতে পারেননি যে, আসলেই হামলা হয়েছে কি না। পরে একজন সহযোদ্ধা তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জ্ঞান ফেরার পর তিনি দেখেন, তার পা হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলা হয়েছে। প্রাণে বাঁচলেও পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে আয়েকে। এখন ঘুমিয়ে, রান্না করে তার দিন কাটে। তিনি বলেন, জীবনটা খুশিতে কাটানোর চেষ্টা করছি আমি। তবে আগে যেসব কাজ করতে পারতাম, সেগুলো এখন আর পারি না। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নিয়ে তার কোনো আফসোস নেই।

মিয়ানমারে যখন সেনা অভ্যূত্থান ঘটে, তখন জাপানের টোকিওতে দেশটির দূতাবাসে ফার্স্ট মিনিস্টার পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন অং শোয়ে মোয়ে। মাসখানেক পর মিয়ানমারের হাজারো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সামরিক সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সমর্থন দেন। এ তালিকায় ৫২ বছর বয়সি অং শোয়ের নাম ছিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close