ভারতে এত দিন বদলানো হচ্ছিল শহর, নগর, জনপদ কিংবা রেলস্টেশনের নাম। এবার নাম বদলানো হলো রাষ্ট্রপতি ভবনের উদ্যানের। পরিচিতি ‘মোগল গার্ডেন’ এবার থেকে পরিচিত হবে ‘অমৃত উদ্যান’ নামে।

রাষ্ট্রপতির উপ-প্রেস সচিব নবিকা গুপ্তা শনিবার (২৮ জানুয়ারি) এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। রবিবার (২৯ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতি ভবনের সব উদ্যান আগামী দুই মাসের জন্য সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেন। সরকারিভাবে এ অনুষ্ঠানকে বলা হয়েছে ‘উদ্যান উৎসব।’

১৫ একর জমিজুড়ে তৈরি তিনটি উদ্যান রয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবনে। এগুলো মোগল আমলের বিভিন্ন বাগান ও পারস্যের উদ্যানের ঢংয়ে তৈরি। আলাদা আলাদাভাবে বাগানগুলোর কোনো নামকরণ আনুষ্ঠানিকভাবে কখনো হয়নি। যদিও বহুকাল ধরে রাষ্ট্রপতি ভবনের এ নয়নাভিরাম উদ্যানগুলো সার্বিকভাবে ‘মোগল গার্ডেন’ নামে পরিচিত পেয়ে আসছে।

কারণ একটি বাগান কাশ্মীরের শ্রীনগরের বিখ্যাত মোগল গার্ডেনের ঢংয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এবার তার আনুষ্ঠানিক নামকরণ হলো। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে পরিচিতি পাবে ‘অমৃত উদ্যান’ নামে। বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র এ সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে শনিবার টুইট করে বলেন, এটা দাসত্বের মনোভাব থেকে নিজেদের মুক্ত করার আরো একটি উদাহরণ।

এদিকে, মোগল গার্ডেনের নাম পরিবর্তন নিয়ে বিরোধীরা সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছেন। সর্বভারতীয় মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন ‘মিম’-এর মুখপাত্র ওয়ারিস পাঠান কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে নিশানা করে বলেছেন, মোগল গার্ডেন ও টিপু সুলতান গার্ডেনের নাম পরিবর্তন করলে দেশের উন্নয়ন হবে? বেকারত্বের অবসান হবে? পেট্রল-ডিজেলের দাম কী কমবে?

সরকারকে অভিযুক্ত করে ওয়ারিস পাঠান আরো বলেন, বিজেপি আসল বিষয় থেকে মনোযোগ সরাতে নামকরণের রাজনীতি করছে।

মোগল গার্ডেনের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রশিদ আলভি বলেন, এটা বিজেপি সরকারের অভ্যাস, এরা শহর ও রাস্তার নাম পরিবর্তন করে দেয়। এবার উদ্যানের নামও পরিবর্তন করে দিয়েছে। আমি এর নিন্দা করছি। অন্য কারো তৈরি করা কোনো কিছুর নাম পরিবর্তন করার অধিকার তাদের নেই। এটাকে উন্নয়ন বলা যায় না। সরকার এখন বিবেকহীন মানুষের হাতে চলে এসেছে।

প্রসঙ্গত, ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বিজেপি নানা সময়ে বিভিন্ন শহর, রেলস্টেশন, রাস্তা ও স্থাপত্যের নাম বদলে দিয়েছে। বিশেষ করে বদলানো হয়েছে মুসলমান নামগুলো। যেমন এলাহাবাদ শহরের নাম বদলে হয়েছে প্রয়াগরাজ। মোগলসরাই স্টেশনের নাম করা হয়েছে দীনদয়াল উপাধ্যায়।

ফৈজাবাদ জেলার নাম পাল্টে হয়েছে অযোধ্যা। বিজেপির একাংশের প্রবল দাবি, গুজরাটের আহমেদাবাদ শহরের নাম বদলে ‘কর্নাবতী’ করা হোক, তেলেঙ্গানার রাজধানী হায়দরাবাদের নাম রাখা হোক ‘ভাগ্যনগর’।

"