প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
কাবুলে পাকিস্তান দূতাবাসের হামলায় দায়ী আইএস
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে অবস্থিত পাকিস্তান দূতাবাসে হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। গত শুক্রবার কাবুলে পাকিস্তান দূতাবাসে হামলা হয়। হামলায় এক নিরাপত্তারক্ষী আহত হয়েছেন। এই হামলাকে ‘হত্যাচেষ্টা’ হিসেবে অভিহিত করে নিন্দা জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
এই হামলার দায় স্বীকার করে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিবৃতি দিয়েছে আইএসের আঞ্চলিক শাখা। জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর অনলাইন তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর এএফপির।
বিবৃতিতে আইএসের আঞ্চলিক শাখা বলেছে, তারা স্বধর্ম ত্যাগকারী পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত ও তার রক্ষীদের ওপর হামলা করেছে। হামলার ঘটনাকে মিশনপ্রধানকে (রাষ্ট্রদূত) ‘হত্যার চেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এ হামলার ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। কাবুল পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেছেন, হামলার ঘটনায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী দূতাবাসের পাশের একটি ভবনে তল্লাশি চালায়। পরে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে দুটি হালকা অস্ত্র।
দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, একজন একক হামলাকারী বাড়িঘরের আড়ালে এসে গুলি চালাতে শুরু করে। হামলাকালে রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মীরা নিরাপদে ছিলেন। আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা এই ‘ব্যর্থ হামলার’ তীব্র নিন্দা জানান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তান কাবুলে কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তার জন্য কাউকে হুমকি সৃষ্টি করতে দেবে না। পাকিস্তান দূতাবাসে হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে দেশটির সরকার।
গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানের হাতে যায়। পরের মাসে তারা সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়। দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা নিয়ে আফগান তালেবান জোর দিয়ে বলে আসছে, তারা দেশটির মাটিতে বিদেশি জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে তৎপরতা চালাতে দেবে না। পাকিস্তানন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে তারা কাবুলে দূতাবাস চালু রেখেছে। কাবুলে পূর্ণ কূটনৈতিক মিশনের কার্যক্রম তারা বজায় রেখে চলছে।
এর আগে আফগানিস্তানে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছিল ইসলামিক স্টেট (আইএস)। আইএসের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত কথিত সংবাদমাধ্যম ‘আমাক’ এই বিবৃতি প্রকাশ করে। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য দেওয়া হয়।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সম্প্রতি এই হামলা হয়। এতে ২২ জন নিহত হয়। সে সময় আফগানিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, হামলায় ২২ জন নিহত এবং ২২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। কাবুল পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, হামলায় নিহতদের সবাই শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ১০ জন নারী।
হামলায় বেঁচে যাওয়াদের একজন বলেন, বেলা ১১টার দিকে হামলাকারীদের একজন ক্যাম্পাসে ঢুকে আত্মঘাতী বোমা হামলা করে। এরপর দুজন বন্দুকধারী নির্বিচারে গুলি চালায়। সে সময় শতাধিক শিক্ষার্থী দেওয়াল টপকে পালাতে থাকে। কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইরানি বই মেলা উদ্বোধনের আগ মুহূর্তে হামলার ঘটনাটি ঘটে। দুই সপ্তাহের কম সময়ে কাবুলে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে এটি দ্বিতীয় হামলা।
"