প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৭ অক্টোবর, ২০২২

ইমরানের লংমার্চ ঠেকাতে সেনা নামাবে পাকিস্তান

ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী দাবি করেছেন, পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে তার দলের লংমার্চের সব ব্যবস্থা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তার এই ঘোষণার পরই প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন ফেডারেল সরকার সেনাবাহিনী ডাকার এবং রাজধানী শহরে সেনা মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মূলত পিটিআই প্রধান ইমরান খান সমাবেশের ডাক দিলে ইসলামাবাদে সেনা মোতায়েন করবে শেহবাজের সরকার। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এবং ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই।

দ্য ডন পত্রিকার খবর অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহর সভাপতিত্বে এক বৈঠকে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) লংমার্চ ঠেকাতে রাজধানী ইসলামাবাদে সেনা মোতায়েনের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সরকারি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে পাকিস্তানের প্রধান সারির এই সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের প্রবেশ বন্ধ করতে রাজধানী ইসলামাবাদের রেড জোনে পাকিস্তান

সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ বলেছেন, মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, কোনো অবস্থাতেই পিটিআইকে ইসলামাবাদে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এর আগে পিটিআই চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দলীয় কর্মীদের ইসলামাবাদে ‘হাকিকি আজাদি মার্চ’-এর জন্য প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তার দলের নেতা ও কর্মীদের শপথ নিতে বলেছিলেন যে, তারা দেশের জন্য জিহাদ বিবেচনা করে তার ডাকের পর লংমার্চে অংশ নেবেন।

ডন বলছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সদস্যদের অবহিত করা হয়, ইমরান খানের লংমার্চে প্রায় ২০ হাজার লোক অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর তাই লংমার্চ চলাকালীন ফেডারেল রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সিন্ধ প্রদেশের পুলিশ, রেঞ্জার্স এবং এফসিকে নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানের শীর্ষ এই নিরাপত্তা কমিটি।

পাকিস্তানের সংবিধানের ২৪৫ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী রাজধানী ইসলামাবাদের রেড জোনে সরকারি ভবন এবং কূটনৈতিক এলাকা সুরক্ষিত করা এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।

এছাড়া গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ওই সভায় সদস্যরা লংমার্চের সময় অস্ত্র বহনে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেন। আরেক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, পিটিআইয়ের লংমার্চকে সমর্থন করার পরিকল্পনাকারী ফেডারেল কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত সোমবার রাজধানী ইসলামাবাদের বানি গালার বাসভবনে অনুষ্ঠিত দলীয় বৈঠকের সময় ইমরান খান খাইবার-পাখতুনখাওয়া এবং পাঞ্জাব প্রদেশের দলীয় কর্মীদের সরকারবিরোধী বিক্ষোভের চূড়ান্ত রাউন্ডের জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান বলে এক প্রতিবেদনে জানায় দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

বৈঠকে পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের স্বাধীনতা মিছিল ও সমাবেশ সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে বাস্তবায়িত হবে। সোমবারের সেই বৈঠকে পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি, পারভেজ খট্টক এবং ইয়াসমিন রশিদসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানায়, আগামী ৯ অক্টোবর মহানবী (সা.) এর জন্মবার্ষিকীর পর যেকোনো সময় দলীয় কর্মীদের লংমার্চের ডাক দেওয়া হতে পারে।

পিটিআই প্রধান ইমরান খান দীর্ঘ সময় ধরে বারবারই বলে আসছেন যে, ‘শুধুমাত্র আগাম নির্বাচনই পাকিস্তানে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকটের অবসান ঘটাতে পারে’।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close