প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব খরা বৃষ্টি বন্যা ভূমিধস

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আবহাওয়াজনিত কোন একক ঘটনাকে দায়ী করা যায় না। পৃথিবীতে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে জটিল প্রক্রিয়ার কারণে, যেখানে ক্রমাগত উষ্ণতা বৃদ্ধি একটি অশুভ লক্ষণ, যার ওপর অনেক বিষয় নির্ভর করে। লন্ডন ইম্পেরিয়াল কলেজের জলবায়ু বিজ্ঞানী ক্যারোলিন ওয়েনরাইট বলেছেন, প্রতিটি ঘটনাই জলবায়ু পরিবর্তন এবং জলবায়ু পরিবর্তনশীলতার সংমিশ্রণ।

জলবায়ু পরিবর্তনের উৎসগুলোর মধ্যে একটি হলো এল নিনো-সাউদার্ন অসিলেশন (এনসো)। প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলে ঘটে যাওয়া এনসো (ইএনএসও) চক্রের দুটি বিপরীত অবস্থা হলো এল নিনো ও লা নিনা। প্রশান্ত মহাসাগরের নিরক্ষীয় পূর্ব উপকূলে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা ও ১২০ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চলে সমুদ্র ও বায়ুমন্ডলীয় তাপমাত্রার মধ্যে অস্থিরতাকে বোঝাতে এনসো শব্দটি ব্যবহার করা হয়। লা নিনা দ্বারা এনসো অন্তর্ভুক্ত শীতল অবস্থা এবং এল নিনো দ্বারা উষ্ণ অবস্থা বোঝানো হয়। স্প্যানীশ শব্দ এল নিনো যার অর্থ ছোট্ট বালক এবং লা নিনা যার অর্থ ছোট্ট বালিকা। এল নিনো উত্তর থেকে দক্ষিণে আর লা নিনা দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবাহিত হয়।

পর্যায়বৃত্ত এই পরিবর্তনের কোন নির্দিষ্ট সময় নেই, তবে প্রতি ৩ থেকে ৮ বছরের মাঝে দেখা যায়। যা ক্রান্তীয় অঞ্চলের চারপাশের জলবায়ু (বাইরে কিছু অঞ্চলে) দুটি চরম অবস্থার মধ্যে বিরাজ করে। এটি এক বছরে, প্রশান্ত মহাসাগরজুড়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত বাতাস একই দিকে উষ্ণ জলের কাছাকাছি ঠেলে দেয়। যখন বাতাস স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দুর্বলভাবে প্রবাহিত হয়, তখন উষ্ণ জল মধ্য ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে থেকে যায়, যার ফলে বিশ্বের সেই অংশে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। এল নিনো বন্যা, খরা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। উন্নয়নশীল যেসব দেশ কৃষিকাজ এবং মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল, তারাই এল নিনো দ্বারা অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। যখন বাতাস বিশেষ করে প্রবলভাবে প্রবাহিত হয়, তখন পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উষ্ণ জল জমে থাকে, যার ফলে সেখানে বেশি বৃষ্টিপাত হয় এবং দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলের গভীরতা থেকে আরও ঠান্ডা জল উঠে আসে। এটি লা নিনা নামে পরিচিত । এমন একটি অবস্থা যা গত দুই বছর ধরে বিশ্বজুড়ে বিরাজ করছে।

লা নিনার প্রভাব পড়ে এমন অঞ্চল যার মধ্যে রয়েছে চিলি, মধ্যপ্রাচ্য এবং পূর্ব আফ্রিকার খরা, পশ্চিম আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায় বৃষ্টিপাতের উচ্চ হার। যদিও বৈশ্বিক জলবায়ুর আন্তঃসম্পর্কের অর্থ হলো এসব প্রভাব অনিবার্যভাবে আরও দূরে অনুভূত হবে, তবে ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে দূরত্বের সঙ্গে কার্যকারণ শৃঙ্খলের শক্তি ম্লান হয়ে যায়। যদিও, গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রাকে প্রভাবিত করার জন্য এগুলোই যথেষ্ট। যেহেতু এসব অবস্থা সমুদ্রের তাপকে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিষয়টি আরও পরোক্ষভাবে সনাক্ত করা যেতে পারে, কারণ এ বছরের শুরুতে হিমালয়ে উচ্চ তাপমাত্রার ফলে হিমবাহের গলে যাওয়াকে ত্বরান্বিত করছে যাতে নদীগুলোর প্রবাহ বেড়ে যেতে পারে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close