প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১১ আগস্ট, ২০২২

ইউক্রেনে পাঠানো পশ্চিমা অস্ত্রের ৭০ শতাংশের খোঁজ নেই!

রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা কিয়েভকে নজিরবিহীন সামরিক সহায়তা দিয়েছে। এত অস্ত্র পাওয়ার পরও রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমাদের পাঠানো অস্ত্রের মাত্র ৩০ শতাংশ ইউক্রেনের সেনাদের হাতে পৌঁছছে, বাকিগুলোর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে কালোবাজারে।

সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে ৫ হাজার ৪০০ ডলারেরও বেশি অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া যুক্তরাজ্য ৩০০ কোটি ডলার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ২৫০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে কিয়েভের অস্ত্রের জন্য। এছাড়া আরো অনেক দেশ ক্ষুদ্র পর্যায়ে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিচ্ছে। রাইফেল, গ্রেনেড থেকে শুরু করে অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল, বিমান বিধ্বংসী মিসাইলসহ নানা ধরনের অস্ত্র দেওয়া হয়েছে ইউক্রেনকে।

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীতে অস্ত্র সরবরাহকারী লিথুয়ানিয়াভিত্তিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা জোনাস ওহমান বলেন, এসব সহায়তার জিনিস সীমান্ত পার হয় ঠিকই, তারপর এগুলোর ৩০ শতাংশ ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর হাতে পৌঁছায়। আর বাকিগুলোর কোনো খোঁজ থাকে না। কারণ এসব অস্ত্রের সাথে ক্ষমতাবান, প্রভাবশালী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীদের একটি বড় নেটওয়ার্ক জড়িত।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র ক্রাইসিস অ্যাডভাইজার ডোনাটেলা রোভেরা সিবিএসকে বলেন, এসব অস্ত্র কোথায় যাচ্ছে সে সম্পর্কে সত্যিই কোনো তথ্য নেই।। কারণ অনেক দেশ অস্ত্র পাঠালেও এসব অস্ত্র কোথায় পৌঁছছে, তার তদারকি করা নিজেদের দায়িত্ব বলে মনে করছে না।

এর আগে গত এপ্রিলে মার্কিন একটি গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছিল, ইউক্রেনে প্রবেশের পর এসব অস্ত্র কোথায় যাচ্ছে, ওয়াশিংটনের এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। কানাডিয়ান একটি সূত্রও গত মাসে জানিয়েছে, তাদের সরবরাহ করা অস্ত্র আসলে কার হাতে পৌঁছল, তা স্পষ্ট জানা নেই।

এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে ইন্টারপোল। তারা বলছে, এসব অস্ত্রের একটি বড় অংশ ইইউতে সংগঠিত অপরাধ গোষ্ঠীর হাতে চলে যাচ্ছে। আর রুশ সরকার বলেছে, এসব অস্ত্র মধ্যপ্রাচ্যে দেখা যাচ্ছে। জুন মাসে আরটিএর একটি তদন্তে দেখা গেছে জ্যাভলিন, এনএলএডব্লিউ অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক সিস্টেম বা ফিনিক্স ঘোস্ট ও সুইচব্লেড বিস্ফোরক ড্রোনের মতো পশ্চিমা আধুনিক অস্ত্রগুলো এখন অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে!

ইউক্রেনে রাডার-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর কথা স্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের : যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন জানিয়েছে, রাশিয়ার রাডার ব্যবস্থাকে নিশানা করতে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবিমানের জন্য রাডার-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। সোমবার পেন্টাগন প্রথমবার এই বিষয়টি স্বীকার করলো। এর আগে ইউক্রেনে এমন কিছু পাঠানোর কথা জানানো হয়নি।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি কলিন কাহল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কিছু সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র কবে বা কতটি পাঠিয়েছে তা জানাননি। এমনকি কোন ধরনের রাডার-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো হয়েছে তাও উল্লেখ করেননি।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেনে এজিএমণ্ড৮৮ হাই-স্পিড-অ্যান্টি-র‌্যাডিয়েশন মিসাইল (হার্ম) পাঠানো হয়েছে।

রেথিওন উৎপাদিত এই ক্ষেপণাস্ত্র ৩০ মাইল দূর পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাতে সক্ষম। ইউক্রেনকে দেওয়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে এটি একটি দূরপাল্লার অস্ত্র।

এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার এস-৪০০ এর মতো বিমান-বিধ্বংসী রাডার ব্যবস্থায় হামলা চালানো যাবে। রাশিয়ার এই ব্যবস্থার কারণে ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর আক্রমণ পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে। এগুলো দিয়ে রাশিয়ার কাউন্টার ব্যাটারি রাডারেও আঘাত করা যাবে।

কাহল জানান, এই ক্ষেপণাস্ত্র সর্বশেষ প্যাকেজগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল। যদিও ১ জুলাই পর্যন্ত ইউক্রেনে পাঠানো সামরিক প্যাকেজে হার্মণ্ডএর কোনও উল্লেখ ছিল না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close