প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
গাজায় অস্ত্রবিরতি ঘোষণা
গাজায় টানা তিন ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ। ইসরায়েলের গত তিন দিনের হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ১৫ শিশুসহ ৪৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইসরায়েলের এ হামলায় আহত হয়েছেন আরো ৩৫০ ফিলিস্তিনি। এ অস্ত্রবিরতি কার্যকরের মাধ্যমে এক বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে গাজায় শুরু হওয়া সবচেয়ে গুরুতর সংঘাত বন্ধ হওয়ায় আশা জাগতে শুরু করেছে। এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ অস্ত্ররিবতিকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বেসামরিক হতাহতের ঘটনায় তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। খবর আলজাজিরার।
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের রকেট হামলার অজুহাতে ইসরায়েলের বিমান হামলা শুরু হয়। এরপর দুই পক্ষের লড়াই অব্যাহত থাকে। রবিবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে উভয় পক্ষই যুদ্ধ থামাতে সম্মত হয়। তবে তারা একে অপরকে সতর্ক করেছে যেকোনো সহিংসতার পথ যেন এড়িয়ে চলে।
ইসলামিক জিহাদ ও ইসরায়েল, উভয় পক্ষই আলাদা বিবৃতির মাধ্যমে অস্ত্রবিরতির ঘোষণা এ দেয়।
স্থানীয় সরকারি অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জনসাধারণের জন্য চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য খুলছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। গাজার পৌরসভাসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ধ্বংসস্তূপ অপসারণের জন্য সরঞ্জাম পাঠাবে এবং প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করবে।
গাজার ক্ষমতাসীন দল হামাস এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত ছিল। যদিও হামাস ইরান-সমর্থিত ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীর তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী।
গত শুক্রবার থেকে ইসরায়েল ব্যাপক হারে হামলা শুরু করে গাজার বিভিন্ন এলাকার শরণার্থী শিবিরগুলো লক্ষ্য করে। তাদের দাবি, ইসলামিক জিহাদের শীর্ষ কমান্ডারদের টার্গেট করে এ হামলা চালায় তারা।
ইরানের রাজধানী তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসলামিক জিহাদের নেতা জিয়াদ আল নাখলা জানান, কায়রো আল সাদিসহ তাদের গোষ্ঠীর দুই উচ্চপদস্থ নেতার ‘মুক্তির জন্য কাজ করবে’।
ইসলামিক জিহাদ রকেট ছোড়া বন্ধ করলে তাদের দুই নেতারা মুক্তির দাবি নিয়ে ইসরায়েল ‘আলোচনায়’ বসবে, এমন শর্তে অস্ত্রবিরতি হয়েছে বলে মিশরীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
শনিবার গাজার রাফা শহরে একটি বাড়িতে বিমান হামলা চালিয়ে ইসলামিক জিহাদের (পিআইজে) জ্যেষ্ঠ নেতা খালেদ মনসুরকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ দিন রাতে দ্বিতীয় আরেক পিআইজে নেতা তাসির জাবারিকেও হত্যা করে ইসরায়েল।
রবিবার ইসলামিক জিহাদ তাদের রকেট হামলা সীমা জেরুজালেম পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। তাদের দুই নেতারা হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এ হামলা চালানো হচ্ছে বলে জানায় পিআইজে।
ফিলিস্তিনের সরকারি সূত্রে জানা যায়, ৪৪ জন নিহত ফিলিস্তিনির মধ্যে অর্ধেকের বেশি বেসামরিক লোক।
উভয়পক্ষের এ অস্ত্রবিরতিতে জাতিসংঘ ও কাতারের সহায়তায় মধ্যস্থতা করে মিসর। ইসলামিক জিহাদের সেক্রেটারি জেনারেল জিয়াদ আল-নাখালা জানিয়েছেন, মিসর নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, ইসরায়েলের হাতে আটক ইসলামিক জিহাদের নেতাদের ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে কাজ করবে তারা।
তবে এ ব্যাপারে এখনো ইসরায়েলের তরফে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এ অস্ত্ররিবতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বেসামরিক হতাহতের ঘটনায় তদন্তের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের ইসলামিক জিহাদের অস্ত্রবিরতির ঘোষণার ফলে রাস্তায় নেমে আনন্দ মিছিল করেন স্থানীয়রা।
"