প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৬ আগস্ট, ২০২২

ইউক্রেনের দোনেৎস্কে চলছে তীব্র লড়াই

ইউক্রেনের দোনেৎস্কের কাছে দুপক্ষের মধ্যে ভয়াবহ লড়াই শুরু হয়েছে। সেখানে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই অঞ্চলের গভর্নর পাবলো কিরিলেঙ্কো বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) এ হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

দোনেৎস্কের গভর্নর জানিয়েছেন, পূর্ব ইউক্রেনের এই শহরের একটি বাসস্ট্যান্ডে বৃহস্পতিবার একটি গোলা এসে পড়ে। সেই সময় বাসস্ট্যান্ডে অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঘটনাস্থলেই বেশ কিছু বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। আহত অসংখ্য। শুধু তাই নয়, ইউক্রেনের সেনার সঙ্গে রাশিয়ার মদদপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রবল লড়াই হচ্ছে সেখানে।

তিনি জানান, তোরেৎস্ক, পিস্কি অঞ্চলে প্রবল লড়াই হচ্ছে। ওই অঞ্চলের মানুষকে পালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও রাস্তায় মুহুর্মুহু গোলাবর্ষণ হচ্ছে। ফলে বেসামরিক মানুষ পালানোরও সুযোগ পাচ্ছেন না। দোনেৎস্ক শহর এখন রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে। ২০১৪ সাল থেকেই তারা সেখানে কার্যত দুর্গ বানিয়ে রেখেছে। কিন্তু শহরতলিতে ইউক্রেন সেনাঘাঁটি তৈরি করে রেখেছে। রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা চেষ্টা করছে, শহরতলি থেকে ইউক্রেনের সেনাকে সরিয়ে দিতে। কিন্তু ইউক্রেনের সেনা পাল্টা দোনেৎস্ক শহর দখলের চেষ্টা করছে। সে কারণেই প্রবল লড়াই চলছে।

রাশিয়ার অভিযোগ, দোনেৎস্ক শহরের কেন্দ্রস্থলে রাশিয়ার সেনার একটি অনুষ্ঠান চলছিল। সেই সময় ইউক্রেন সেখানে মিসাইল হামলা চালায়। তবে সেই ঘটনায় হতাহতের কোনো পরিসংখ্যান রাশিয়া দেয়নি। ইউক্রেন রাশিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দোনেৎস্কের ঠিক পাশে মাইকোলেইভেও তীব্র লড়াই চলছে। সেখানে গোলার আঘাতে একটি বাড়ি সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। এ শহরেই ইউক্রেন সেনাঘাঁটি বানিয়ে লড়াই চালাচ্ছে। ফলে রাশিয়া একের পর এক মিসাইল আক্রমণ চালাচ্ছে। অন্যদিকে ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু প্রকল্পের আশপাশেও লড়াই চলছে। বৃহস্পতিবার রাশিয়া সেখানে ৬০টি রকেট ছুড়েছে বলে অভিযোগ। এক লাখ সাত হাজার মানুষ এই অঞ্চলে থাকেন। তাদেরও পালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে এখানেই পরমাণু কেন্দ্রটির দখল নিয়েছে রাশিয়া। অভিযোগ, তার ভেতর থেকে হামলা চালাচ্ছে তারা। জাতিসংঘের পরমাণুবিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, তারা নিয়মিত ওই কেন্দ্রটির খবর পাচ্ছে না।

ইউক্রেন ছাড়লো আরও তিনটি শস্যবাহী জাহাজ : খাদ্যশস্য বোঝাই আরও তিনটি জাহাজ ইউক্রেনের বন্দর ছেড়েছে। এগুলো পরিদর্শনের জন্য তুরস্কের পথে রয়েছে। শুক্রবার তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আটকে পড়া খাদ্যশস্য রফতানির জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের চুক্তি যে কার্যকর, এতে তা প্রমাণিত হচ্ছে।

ইউক্রেন ও রাশিয়া বিশ্বের দুটি শীর্ষ গম উৎপাদনকারী ও রফতানিকারক দেশ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করলে বৈশ্বিক জ্বালানি ও খাদ্য সরবরাহ দেখা দেয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তিনটি জাহাজে ৫৮ হাজার টন ভুট্টা রয়েছে। ইউক্রেনের রফতানি করা এসব শস্যের বেশিরভাগ পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর পর গত সপ্তাহের শুরুতে প্রথম শস্যবাহী জাহাজ ইউক্রেন ত্যাগ করে। গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির আওতায় এটি কৃষ্ণ সাগর পাড়ি দেয়। বুধবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এটি পরিদর্শন শেষে লেবাননের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে।

শুক্রবার যে তিনটি জাহাজ ইউক্রেন থেকে রওনা দিয়েছে সেগুলো যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনীয় বন্দরে আটকে পড়া অসংখ্য চালানের মধ্যে কয়েকটি।

কয়েক হাজার টন খাদ্যশস্য রফতানি শুরু হলেও এই পরিমাণ বন্দরগুলোতে আটকে পড়া ২০ মিলিয়ন টনের ক্ষুদ্র অংশ।

ওয়াশিংটনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট-এর কৃষি ও বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ডেভিড ল্যাবোর্ডে বলেছেন, আটকে পড়া খাদ্যশস্যের মধ্যে প্রায় ৬ মিলিয়ন টন গম এবং এগুলোর মাত্র অর্ধেক মানুষের খাদ্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close