প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২১ জুন, ২০২২

সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেন ম্যাক্রোঁ

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দেশটির সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে অন্য দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারলে দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হতে পারে। খবর রয়টার্সের।

ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থি এনসেম্বল জোট অবসরের বয়স বাড়াতে ও ইইউ একীকরণকে আরো গভীর করতে চায়। নির্বাচনে সর্বাধিক আসন পাওয়ার কথা ছিল জোটটির। কিন্তু দেশটিতে এখন একটি বড় বামপন্থি জোট সর্ববৃহৎ বিরোধী দল হতে যাচ্ছে, ডানরা রেকর্ড সংখ্যক আসনে জয়লাভ করেছে। রক্ষণশীলদেরও কিংমেকার হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লে মায়ার এই ফলকে গণতান্ত্রিক ধাক্কা বলে অভিহিত করেছেন। তিন বলেছেন, অন্য জোটগুলো সহযোগিতা না করে, তাহলে ফরাসিদের সংস্কার ও সুরক্ষায় আমাদের ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করবে।

গত এপ্রিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ম্যাক্রোঁ তার প্রতিপক্ষকে পরাজিত করলেও এবার তার দলকে আরো অধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

সম্প্রতি এলিজাবেথ বর্নিকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছিলেন ম্যাক্রোঁ। বর্তমান পরিস্থিতিকে নজিরবিহীন বললেন বর্নি। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে নিজের বাসভবনে ফিরে তিনি বলেন, আধুনিক ফ্রান্স কখনো এমন ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি দেখেনি। ফ্রান্সের ৫৭৭ আসনের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৮৯ আসন। কিন্তু মাক্রোঁর মধ্যপন্থি জোট এনসেম্বলে পেয়েছে ২৪৫টি আসন।

তারকা বামপন্থি নেতা জ্যঁ-লুক মেলেশঁ এই নির্বাচনে বাজিমাত করেছেন। বামপন্থি ও গ্রিনদের নিয়ে গঠিত তার নিউ ইকোলজিক্যাল অ্যান্ড সোশ্যাল পপুলার ইউনিয়ন (এনইউপিইএস) জোট পেয়েছে ১৩১ আসন। অন্য বামপন্থি দলগুলো পেয়েছে ২২ আসন।

কট্টর ডানপন্থি মেরিন লঁ পেনের নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল র‌্যালির আসন বেড়েছে। তারা পেয়েছে ৮৯টি আসন। ডানপন্থি রিপাবলিকানস (ইউডিআই) পেয়েছে ৬৪ আসন।

নির্বাচনের ফলাফলের প্রতিক্রিয়া প্রধানমন্ত্রী বর্নি বলেছেন, ‘এই পরিস্থিতি আমাদের দেশের ঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরেছে। এসব ঝুঁকি আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মোকাবিলা করছি। কার্যকর সংখ্যাগরিষ্ঠতা গড়ে তুলতে আমরা কাল থেকে কাজ করব।’

তবে কাজটি এতটা সহজ হবে না। কারণ অ্যাসেম্বলির দুটি বড় জোটই সহযোগিতার বিষয়ে কম আগ্রহী। তবে এ বিষয়ে অনমনীয় অর্থমন্ত্রী ব্রুনো ল্য মেয়ার। যদিও এ জন্য অনেক কিছু করতে হবে বলে মানছেন তিনি।

অতি বামপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত মেলেশঁ সমর্থকদের বলেছেন, প্রেসিডেন্টের দল ধরাশায়ী হয়েছে। তাদের হাতে এখন সব সম্ভাবনাই রয়েছে।

মেরিন লঁ পেন বলেছেন, ইমানুয়েল মাক্রোঁর দুঃসাহসিক অভিযাত্রার ইতি ঘটল। তাকে সংখ্যালঘু সরকারে নামিয়ে আনা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মাক্রোঁর জোটের সামনে দুটি পথ খোলা। অন্যদের জোটে ভিড়িয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করা অথবা সংখ্যালঘু সরকার চালিয়ে যাওয়া। সংখ্যালঘু সরকার চালিয়ে গেলে প্রতিটি বিল পাসের সময় দলগুলোর সঙ্গে তার জোটকে আলাদাভাবে মতৈক্যে পৌঁছাতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close