প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৬ মে, ২০২২

পুতিনকে উৎখাতে ক্যু চলছে!

ইউক্রেনের এক শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উৎখাতে একটি অভ্যুত্থান চলছে। এটি থামানো যাবে না। ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান সামরিক অভিযানের মধ্যে এমন দাবি করা হলো। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা মেজর জেনারেল কিরিলো বুদানভ এ দাবি করেছেন।

স্কাই নিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বুদানভ ভবিষ্যদ্বাণী করেন, আগামী আগস্টের মাঝামাঝি নাগাদ এ যুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেবে। আর চলতি বছরের শেষ নাগাদ যুদ্ধ শেষ হবে।

বুদানভ দাবি করেন, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া হেরে গেলে দেশটির প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সরিয়ে দেওয়া হবে। রাশিয়া ভেঙে পড়বে।

বুদানভ বলেন, এ যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত রাশিয়া ফেডারেশনকে নেতৃত্বের পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যাবে। এ প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তারা সেই পথেই এগিয়ে যাচ্ছে।

পুতিনকে উৎখাতে অভ্যুত্থান (ক্যু) চলছে কি না, জানতে চাইলে ইউক্রেনের এই সামরিক কর্মকর্তা দাবি করেন, ‘হ্যাঁ, তা চলছে। এটি বন্ধ করা অসম্ভব।’

বুদানভ আরও দাবি করেন, ক্রেমলিনের নেতা পুতিন ক্যানসারে আক্রান্ত। তাঁর অন্যান্য অসুস্থতাও রয়েছে।

বুদানভ বলেন, ‘পুতিন খুব খারাপ মানসিক ও শারীরিক অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। তিনি খুবই অসুস্থ।’ তথ্যযুদ্ধের অংশ হিসেবে এসব কথা ছড়ানো হচ্ছে না বলেও দাবি করেন বুদানভ। তিনি বলেন, তিনি তাঁর দাবির ব্যাপারে নিশ্চিত।

বুদানভ আরও বলেন, তিনি যে কাজে আছেন, তাতে তিনি না জানলে এসব কথা আর কে জানবেন! পুতিনের স্বাস্থ্যগত অবস্থা নিয়ে নানা জল্পনাকল্পনা আছে। এ জল্পনা দিন দিন বাড়ছে। কিছু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে থাকতে পারেন।

রুশ নেতার কথিত অসুস্থতাসংক্রান্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে ক্রেমলিন কখনো কোনো মন্তব্য করেনি। ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তা বুদানভ স্কাই নিউজকে বলেন, চলমান যুদ্ধে রাশিয়া ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সেনারা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দনবাসের দখলে নিতে বর্তমানে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু সেখানেও তাঁরা ইউক্রেনের সেনাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন। পূর্ব দনবাসের সিভারস্কি ডোনেট নদী পার হতে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে রুশ সেনাদের। রুশ বাহিনীকে খারকিভ ছাড়তে বাধ্য করারও দাবি করছে ইউক্রেন।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র-বিমান হামলার পাশাপাশি উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ দিক থেকে স্থল অভিযান শুরু করে রাশিয়া। পশ্চিমা অস্ত্রে সমৃদ্ধ ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে উত্তর দিক থেকে সেনা সরিয়ে পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে হামলা জোরদার করে রুশ বাহিনী।

ইউক্রেনে পাঠানো এক-তৃতীয়াংশ সেনা হারিয়েছে রাশিয়া: ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনে মোতায়েন করা পদাতিক সেনাদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হয়ত হারিয়েছে রাশিয়া। ডনবাস অঞ্চলে লড়াইয়ে সুবিধা করতে পারছে না এবং সম্ভাব্য সময়সীমা থেকে অনেকখানি পিছিয়ে রয়েছে।

সামরিক গোয়েন্দা তথ্যের বরাতে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী টুইটারে লিখেছেন, প্রথমদিকে ছোট ছোট অগ্রগতি হলেও গত মাসজুড়ে রাশিয়া ভূখণ্ড দখল করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি।

তিনি আরও লিখেছেন, হয়ত ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে মোতায়েন করা সেনাদের এক-তৃতীয়াংশ হারিয়েছে রাশিয়া। ব্রিটিশ গোয়েন্দা তথ্যে আরও বলা হয়েছে, আগামী ৩০ দিনে রাশিয়ার নাটকীয় অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।

২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রমণের পর ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রাশিয়াকে রাজধানী কিয়েভ দখলের পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য করেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও দ্রুত জয় পায়নি তারা। এমনকি দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ থেকেও রুশ সেনাদের বিতাড়িত করছে ইউক্রেন।

রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ইজিউম শহরে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন। তবে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী রবিবার জানিয়েছে, গত মাস থেকে প্রধান যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হওয়া ডনবাসের বিভিন্ন স্থানে রুশ বাহিনী এগোচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close