প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২২

ইউক্রেনে রুশ হামলার শঙ্কা

দূতাবাসকর্মীদের বের হয়ে আসার নির্দেশনা যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের

আঞ্চলিক উত্তেজনা বেড়ে চলায় ইউক্রেনে থাকা দূতাবাসের কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, সেদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদেরও সেখান থেকে বের হয়ে আসার বিষয়টি বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে তারা। এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া- এমন খবর তাদের কাছে আছে।

তবে ইউক্রেনে কোনো ধরনের হামলার পরিকল্পনার খবর ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। এদিকে সংঘাত বন্ধে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। চলমান দ্বন্দ্ব নিরসনে শান্তির জন্য বুধবারকে প্রার্থনার দিন ঘোষণা করেন তিনি। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।

চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে এবং ‘যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সম্ভাব্য হয়রানির মুখে পড়ার’ আশঙ্কার কথা জানিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন ভ্রমণ না করতেও জনগণকে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।

পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বার্তায় বলা হয়েছে, ‘খবর পাওয়া যাচ্ছে যে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা করছে।’

পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেনে মার্কিন দূতাবাস খোলা রাখা হবে, তবে ওয়াশিংটন থেকে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে, ‘যেকোনো সময়’ একটি আগ্রাসন শুরু হতে পারে। তারা বলছেন, ওই ধরনের একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের বের করে আনার মতো অবস্থা সরকারের থাকবে না।

সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান সতর্ক করেছেন, ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া প্রায় এক লাখ সৈন্য সমাবেশ করায় ইউরোপে নতুন করে সংঘাত সৃষ্টির ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে ইউক্রেনকে সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বিভিন্ন ‘যুদ্ধ উপকরণ’ পাঠিয়েছে। সবশেষ বাইডেন প্রশাসনের পাঠানো ২০ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা সহায়তা কিয়েভে পৌঁছেছে। সম্মুখ সারির সেনাদের রসদ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৯০ টনের মতো গোলাবারুদ শনিবার ইউক্রেনে পৌঁছেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, ‘রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের কৌশল মোকাবিলায়’ আরো বেশি সামরিক সহায়তা পাঠানোর মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মজবুত করাসহ ধারাবাহিক বেশকিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে তার সরকার।

এর আগেও ইউক্রেনের ভূমি দখল করেছে রাশিয়া। সেদেশে মস্কোপন্থি প্রেসিডেন্টকে উৎখাত করার জেরে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া অঞ্চলটি রাশিয়া দখল করে নেয়। এরপর থেকে সেদেশের পূর্বাঞ্চলে রুশ-সমর্থক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে ইউক্রেইনের বাহিনীর লড়াইয়ে প্রায় ১৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

ব্রিটিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্রিটিশ কূটনীতিকদের নির্দিষ্ট কোনো হুমকি না থাকলেও তাদের অনেক কর্মী কিয়েভে কাজ করছেন এবং তাদের যুক্তরাজ্যে ফিরতে বলা হয়েছে।

তবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা দেয়নি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউর পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেফ বরেল বলেন, আমরা কর্মীদের তুলে নিয়ে কোনো ‘নাটকীয়’ অস্থিরতা তৈরি করতে চাই না।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ তোলে, ইউক্রেন সরকারে একজন মস্কোপন্থি ব্যক্তিকে বসানোর পরিকল্পনা করছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।

ব্রিটিশ মন্ত্রীরা হুশিয়ার করেছেন, ইউক্রেনে হামলা হলে রাশিয়াকে চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে।

ইউক্রেনে আগ্রাসনের পরিকল্পনার কথাও অস্বীকার করেছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট পুতিন পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা চাহিদা দাবি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটে না নেওয়া এবং পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সামরিক মহড়া বাতিল করা। এগুলো নিজেদের জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখে রাশিয়া।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close