প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৪ জানুয়ারি, ২০২২

একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মধ্যেই এবার উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পিয়ংইয়ংয়ের সর্বশেষ ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রথম প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কোরিয়ার পাঁচ কর্মকর্তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি হাতে পেতে উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তাদের ভূমিকার কারণে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ওই পাঁচ ব্যক্তি উত্তর কোরিয়ায় গণবিধ্বংসী অস্ত্র ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জন্য সরঞ্জাম সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত।

এছাড়াও উত্তর কোরিয়ার আরো এক ব্যক্তি, এক রুশ নাগরিক এবং রাশিয়ার একটি কোম্পানির বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ। অভিযুক্ত এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পিয়ংইয়ংয়ের গণবিধ্বংসী কর্মকাণ্ডে সহায়তা দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ট্রেজারি ফর টেররিজম অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্সের আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন এক বিবৃতিতে বলেন, উত্তর কোরিয়ার গণবিধ্বংসী অস্ত্র ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি প্রতিরোধের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তার অংশ হিসেবে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। উত্তর কোরিয়া অবৈধভাবে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের জন্য সরঞ্জাম সংগ্রহ করছে- এমন অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এ ধরনের কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

নেলসন আরো বলেন, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উত্তর কোরিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কূটনৈতিকভাবেও বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এ ঘটনা প্রমাণ করেছে যে উত্তর কোরিয়া এ ধরনের কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের নিষেধাজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত পাঁচজন উত্তর কোরীয় নাগরিকের মধ্যে একজন বর্তমানে রাশিয়ায় এবং অন্য চারজন চীনে অবস্থান করছে। তাদের সবার বিরুদ্ধেই উত্তর কোরিয়ার সেকেন্ড অ্যাকাডেমি অব ন্যাচারাল সায়েন্সে অর্থ, পণ্য বা অন্যান্য সেবা প্রদানের অভিযোগ রয়েছে, যা মূলত দেশটির সামরিক প্রতিরক্ষা কর্মসূচিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।

এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে বুধবার উত্তর কোরিয়া জানায়, পিয়ংইয়ংয়ের সর্বশেষ উৎক্ষেপিত ক্ষেপণাস্ত্রটি ছিল একটি হাইপারসনিক মিসাইল। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের উপস্থিতিতে এই ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয় বলে দাবি করে দেশটি।

মঙ্গলবার নিক্ষেপ করা এই ক্ষেপণাস্ত্রটির গতি শব্দের চেয়ে ঘণ্টায় ১০ গুণ বলে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইয়োনহাপ। আর গত সপ্তাহে উৎক্ষেপিত মিসাইলটির গতি ছিল শব্দের গতির চেয়ে ছয়গুণ বেশি।

উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানায়, মঙ্গলবার নিক্ষেপ করা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার (৬২১ মাইল) দূরের একটি লক্ষ্যবস্তুতে ‘সফলভাবে আঘাত’ হেনেছে।

সর্বশেষ এই পরীক্ষাসহ এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো হাইপারসনিক মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে কোরীয় উপদ্বীপের এই দেশটি। এর মধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানেই দুবার শব্দের চেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালালেন কিম।

অবশ্য নতুন বছরের শুরুতেই দেওয়া ভাষণে পিয়ংইয়ংয়ের প্রতিরক্ষা শক্তি আরো জোরদারের ঘোষণা দিয়েছিলেন কিম জং উন। আর সেই অনুযায়ী একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি। তবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার গতিতে রাশ টানা হয় কি না সেটিই এখন দেখার বিষয়। নতুন বছরে দেওয়া এক ভাষণে কিম জং-উন বলেছেন, পিয়ংইয়ং প্রতিরক্ষা ক্ষমতা আরো শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। কোরিয়া উপত্যকায় অস্থিতিশীল সামরিক পরিবেশের কারণে পিয়ংইয়ং প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বাড়াতে চায় বলেও জানান। এরপর নতুন বছরের প্রথম ১০ দিনে দুটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হলো।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close