প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১১ জানুয়ারি, ২০২২

রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া হুশিয়ারি

ইউক্রেন ইস্যুতে জেনেভায় বৈঠক

ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্ক দিনকে দিন খারাপের দিকেই যাচ্ছে। রাশিয়াকে অনেকটা হুমকির সুরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে হয় সংলাপ নয়তো সংঘাত এই দুইয়ের যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে। ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় লাখ খানেক রুশ সেনা অবস্থানের মধ্যেই এমন মন্তব্য করেছেন ব্লিংকেন। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় স্থানীয় সময় সোমবার আলোচনায় বসেছে রাশিয়া। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।

ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার চরম উত্তেজনার মধ্যে গত রবিবার নৈশভোজে অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্র ও মস্কোর জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকের পাশাপাশি সামরিক কর্মকর্তারাও। গতকাল পূর্বনির্ধারিত আলোচনায় বসার আগে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বৈঠকটি হয়। গত মাসে ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খসড়া চুক্তি হয়। যার অনেকগুলোই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন। কারণ এরমধ্যে একটি হলো ইউক্রেনকে কখনো ন্যাটোর সদস্য করা যাবে না।

রবিবারের নৈশভোজের বৈঠককে ‘চমৎকার’ বলে বর্ণনা করেছেন রুশ প্রতিনিধি দলের প্রধান উপণ্ডপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। তিনি বলেন, আলোচন জটিল ছিল। কিন্তু আগামীতে আলোচনার জন্য সহায়ক হবে। আমি মনে করি আমরা সময় নষ্ট করব না। আমি কখনই আশা ছাড়াব না। কারণ সব সময় আশাই থাকি।

বৈঠকে অংশ নেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপণ্ডপররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েনডি শেরম্যান। তিনি রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা এবং সার্বভৌম দেশগুলোর জোটসঙ্গী বেছে নেওয়ার স্বাধীনতার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতিগুলোর ওপর জোর দেন। কূটনীতির মাধ্যমে প্রকৃত অগ্রগতিকে যুক্তরাষ্ট্র স্বাগত জানাবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

বৈঠক শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, আমাদের সামনে দুটি পথ খোলা আছে। সংকট উত্তরণের জন্য একটি হলো সংঘাত এড়াতে কূটনৈতিক পথ। অন্যটি সংঘাত। রাশিয়া যদি আবারও ইউক্রেনে আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করে এর জন্য চরম মূল্য দিতে হবে। এখন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বেছে নিতে হবে তিনি কোন পথে হাঁটতে চান। এদিকে বৈঠকে নিরাপত্তার গ্যারান্টি, ক্ষেপণাস্ত্রের সীমাবদ্ধতা, সামরিক মহড়ার মতো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।

আলোচনার আগে রুশ উপণ্ডপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বলেছেন, ইউক্রেন ইস্যুতে তার দেশ কোনো ছাড় দেবে না। মস্কোর এই কঠোর অবস্থানের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আসন্ন আলোচনার সম্ভাব্য ফল নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।

তিন দশক আগে স্নায়ুযুদ্ধ অবসানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এবারই। এর আগে ক্রিমিয়া দখল নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও তা বেশি দূর গড়ায়নি। কিন্তু এবার ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা মোতায়েন নিয়ে যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে, তা আগের সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে কাজাখস্তানে বিক্ষোভ দমনে দেশটির আহ্বানে সাড়া দিয়ে মস্কোর সেনা প্রেরণ বড় ধরনের উদ্বেগের সূচনা করে।

বিদ্যমান উত্তেজনার মধ্যে রুশ-মার্কিন আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে কয়েক ধাপে। এরমধ্যে জেনেভা, ব্রাসেলস ও ভিয়েনাতে দুই দেশের মুখোমুখি বসার কথা। কিন্তু রাশিয়ার উপণ্ডপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকোভকে উদ্ধৃত করে দেশটির রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, পরিস্থিতি এমন যে, প্রথম ধাপের আলোচনার পরই আলোচনা থেমে যেতে পারে। তিনি বলেছেন, এটাই হবে এমন বলছি না। কিন্তু সম্ভাব্য পরিস্থিতি এমন হতে পারে।

সের্গেই রিয়াবকোভ বলেন, আসন্ন আলোচনার আগে পশ্চিমা দেশগুলোর তরফ থেকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। এ সম্পর্কিত কোনো চাপের কারণে আমরা কোনো ধরনের ছাড় দেব না।

পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হতে মরিয়া ইউক্রেন। তবে এতে নারাজ রাশিয়া। গত বছর শেষের দিক থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে লাখো সেনার সমাবেশ ঘটিয়েছে মস্কো। তাদের দাবি, ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত করা যাবে না। ইউরোপের পূর্ব দিকে আর বিস্তার ঘটানো যাবে না ন্যাটোর।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close