প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৩ নভেম্বর, ২০২১

ভারতীয় কৃষকদের এবার ‘সংসদ চলো’ কর্মসূচি

বিতর্কিত তিন কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা আসার পর সাহসী হয়ে ওঠা ভারতীয় কৃষকদের জোট সংযুক্ত কিষান মোর্চা (এসকেএম) নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দিল্লির সিংঘু সীমান্তে জোটের বৈঠকের পর একাধিক কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে আগামী ২৯ নভেম্বর পার্লামেন্ট অভিমুখে ‘সংসদ চলো’ মিছিল। ওই দিন পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হবে। খবর এনডিটিভির।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো বৈঠক করে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। কৃষক নেতারা বাকি দাবিগুলো পূরণে প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে কৃষি পণ্যের মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস (এমএসপি) নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন আইন প্রণয়ন।

প্রধানমন্ত্রী নতুন তিন কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা দিলেও এসব আইনের বিরুদ্ধে এক বছরের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করে আসা কৃষক নেতারা বিক্ষোভ প্রত্যাহার না করতে অটল রয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, পার্লামেন্টে আইন তিনটি প্রত্যাহার হওয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা। এমএসপি নিয়ে আইন প্রণয়নের পাশাপাশি কৃষকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো প্রত্যাহার চান কৃষক নেতারা। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আগামী ২৭ নভেম্বর ফের বৈঠকে বসবেন কৃষক নেতারা।

এর আগে গত শুক্রবার কৃষক আন্দোলনের কাছে অবশেষে মাথানত করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতে কৃষক বিক্ষোভের জন্ম দেওয়া বিতর্কিত তিনটি নতুন কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা দেন তিনি। শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের জন্মদিনের উৎসব গুরুপর্ব উপলক্ষে দেওয়া এক ভাষণে এত দিনের দুর্ভোগের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মোদি।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমি দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমাদের হয়তো তপস্যাতেই খামতি ছিল। তাই কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এ মাসে শুরু হতে চলা সংসদ অধিবেশনে আইনগুলো প্রত্যাহার করা হবে। সবাইকে অনুরোধ করছি, আসুন, আন্দোলন ছেড়ে নতুন দিনের সূচনা করি। এবার আপনারা মাঠে ফিরে যান, পরিবারের কাছে যান।

প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও আইন তিনটির পক্ষেই অবস্থান নেন মোদি। তিনি বলেন, এসব আইনের উদ্দেশ্য ছিল সংস্কার। মূলত দেশের ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্যই আইন করা হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি। মোদি বলেন, ‘যা কিছুই করেছি তা কৃষকদের জন্যই। যা কিছুই করছি তা দেশের জন্য।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ১০০ জনের মধ্যে ৮০ জন ক্ষুদ্র কৃষক। তাদের জমির পরিমাণ দুই হেক্টরের কম। তাদের জীবনের আধার এই ছোট জমিটুকু। এমন কৃষক রয়েছে প্রায় ১০ কোটি। এই ছোট জমিতেই তারা নিজেদের পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে কাজ করছে। তাই বীজ, বিমা, বাজার আর সেভিংসের ক্ষেত্রে কাজ করেছি। আমরা ফসল বিমা যোজনাকে আরো কার্যকরী করেছি। পশুপালন ও মাছচাষের সঙ্গে যুক্ত কৃষকরা কিষান ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পেতে শুরু করেছেন। কৃষকদের সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকার কাজ করছে।

নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা দেওয়ার পরও শীর্ষ কৃষক নেতা রাকেশ তিকাইত বলেছেন, পার্লামেন্টে আইন তিনটি প্রত্যাহার হওয়ার আগ পর্যন্ত বিক্ষোভ থামাবেন না তারা। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের মতো কয়েকটি বড় রাজ্যে আগামী বছরের নির্বাচনকে সামনে রেখে মোদি এই ঘোষণা দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে আন্দোলনরত কৃষকরা বলছেন, পার্লামেন্টে আইন তিনটি প্রত্যাহার হওয়ার আগ পর্যন্ত বিক্ষোভ থামাবেন না তারা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close