প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৩ নভেম্বর, ২০২১

ইউরোপে কোভিডের নতুন ঢেউ

করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন ঢেউ ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। এ নিয়ে ‘খুবই উদ্বিগ্ন’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক হ্যান্স ক্লুগ বলেছেন, জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আগামী মার্চ মাস নাগাদ ইউরোপে পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যুর রেকর্ড হতে পারে।

মাস্ক পরার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হলে তা সংক্রমণ রোধে তাৎক্ষণিকভাবে কাজে লাগতে পারে।

ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে কোভিড শনাক্তের উচ্চ হার এবং জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে সর্বাত্মক ও আংশিক লকডাউনের ঘোষণা দেওয়ার প্রেক্ষাপটে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে এ সতর্কবার্তা এলো।

হ্যান্স ক্লুগ বলেছেন, শীতের মৌসুমের পাশাপাশি অপর্যাপ্ত টিকাদান এবং অতি সংক্রামক করোনাভাইরাসের ডেলটা ধরনের দাপটের কারণে ছড়াচ্ছে বেশি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি, টিকা গ্রহণের হার বাড়ানো ও নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি কোভিড সংক্রমণ মোকাবিলায় সহায়ক হতে পারে।

সাক্ষাৎকারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের অঞ্চলে আবারও মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কোভিড-১৯। এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কী করা দরকার হবে, তা আমাদের জানা।’ ক্লুগ বলেন, ‘বাধ্যতামূলক টিকাদান ব্যবস্থাকে শেষ উপায় হিসেবে দেখা উচিত, তবে বিষয়টি নিয়ে আইনি ও সামাজিক বিতর্ক করার এখনই সময়।’

কোভিড সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সোমবার থেকে ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়া পুরোপুরি লকডাউন শুরু করতে চলেছে। এর আগে দেশটিতে যারা টিকা নেননি, তাদের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।

চেক প্রজাতন্ত্রও বিভিন্ন বিধিনিষেধ জারি করেছে। স্লোভাকিয়া নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। নেদারল্যান্ডসও লকডাউন শুরু করেছে। জার্মানি টিকা না নেওয়া লোকজনের জন্য বিধিনিষেধ জারি করতে রাজি হয়েছে।

বিশ্বে করোনায় মৃত্যু-শনাক্ত কমেছে : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী গত ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু রাশিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৫২ জনের। একই সময়ে বিশ্বে নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৮৬ হাজার ১১৬ জন। এছাড়া নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ২৯ হাজার ২৫৭ জন। সোমবার সকাল সোয়া ৮টায় আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানবিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ লাখ ৬৭ হাজার ৭৫৮ জনে। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ২৫ কোটি ৭৮ লাখ ২০ হাজার ৮৬২ জন। সুস্থ হয়েছেন ২৩ কোটি ২৭ লাখ ১৮ হাজার ৩৮৫ জন।

করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৮৫ লাখ ৯২ হাজার ৮১০ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৬৫১ জন। এছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪১ জন।

ভারতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৪৫ লাখ ১০ হাজার ৭০৪ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৬২ জনের। আর করোনা থেকে সেরে উঠেছেন ৩ কোটি ৩৯ লাখ ২২ হাজার ৩৭ জন।

করোনায় যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে। দেশটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১২ হাজার ৭২২ জনের। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ২০ লাখ ১৭ হাজার ২৭৬ জন। দেশটিতে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ২ কোটি ১২ লাখ ২২ হাজার ৩২ জন। তালিকায় এরপর রয়েছে যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, তুরস্ক, ফ্রান্স, ইরান, জার্মানি, আর্জেন্টিনা, স্পেন, কলম্বিয়া ও ইতালি।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান প্রদেশের হুবেই শহরে প্রথম করোনার অস্তিত্ব শনাক্ত হয়। কয়েক মাসের মধ্যেই ভাইরাসটি বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়ে। গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close