প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ফিলিস্তিনিদের গণহারে গ্রেপ্তার

ইসরায়েলের অন্যতম সুরক্ষিত একটি কারাগার থেকে কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দি পালানোর পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী বড় ধরনের গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। পালানো ছয় বন্দিকেই পুনরায় গ্রেপ্তার করতে পারলেও অভিযান বন্ধ করেনি তারা। এ পর্যন্ত অন্তত শতাধিক ফিলিস্তিনিকে ধরে নিয়ে গেছে ইসরায়েলি সেনারা। এরমধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে। খবর আলজাজিরার।

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংঘ আদামির বলছে, ৬ সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত শতাধিক ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদামিরের কর্মী মিলেনা আনসারি বলেন, ৬ সেপ্টেম্বর বন্দিদের কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে আমরা দিনে ১৪ জনের গ্রেপ্তার হওয়ার তথ্য পেয়েছি। এটা ইসরায়েলে গ্রেপ্তার হওয়া ফিলিস্তিনিরা বাদে। সুড়ঙ্গ খুড়ে যে ছয়জন বন্দি পালিয়েছিলেন তাদের সবাইকে আবারও কারাগারে ঢোকানো হয়েছে। সর্বশেষ যে দুজন পলাতক ছিলেন রবিবার সকালের জেনিন সিটিতে তারা আত্মসমর্পণ করেন।

কারাগার থেকে ছয়জন পালানোর পর তাদের সন্ধানে বেশ বড় রকমের অভিযানে নামে ইসরায়েলি বাহিনী। জেনিন শহরে পলাতকদের পরিবারের সদস্যদেরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গ্রেপ্তারও করা হয় কয়েকজনকে। জেনিনের পাশপাশি এই গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ রামাল্লাহ, হেবরন, নাবুলাস ও আশপাশের গ্রামেও চলে।

গ্রেপ্তার করা হচ্ছে শিশুদেরও : সাম্প্রতিক এই অভিযানে বেশ কয়েকজন শিশুকেও তুলে নেওয়া হয়েছে। রামাল্লাহ কাছাকাছি একটি শহর নিলিন থেকে ১৩ বছর বয়সি মুস্তাফা আমিরাকে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার করে ইসরায়েলি সেনারা। তারা বাবা খলিল আমিরা আলজাজিরাকে বলেছেন, মুস্তাফা ও তার আরেক ভাই মুহাম্মদকে (১৫) গ্রেপ্তার করে পিটিয়েছে অন্তত জনাদশেক ইসরায়েলি সেনা। এরপর সারা রাত কোনো খাবার, পানি না দিয়ে তাদের আটকে রাখে পুলিশ।

আমিরা বলেন, ইসরায়েলি সেনারা তাকে টেনেহিঁচড়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাকে কয়েক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ছোট এই ছেলেটাকে অস্ত্রধারী এতগুলো মানুষ কেন পেটাবে? তার নামে কোনো মামলা থাকলে তারা আইনিভাবে ব্যাপারটা সামনে আনতে পারত। আমিরা জানান, তিনি তার ছেলেকে আপাতত স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। কারণ তার সঙ্গে যা হয়ে গেছে, সেটা এখনো সে ভুলতে পারেনি।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের একজন প্যারাডেমিক জিয়াদ আবু লতিফা বলেন, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অপ্রাপ্তবয়সস্কদের নির্যাতিত হওয়াটা চলমান একটা সমস্যা। তিনি বলেন, আমি এমন বেশ কিছু ঘটনা জানি, যেখানে অপ্রাপ্তবয়স্কদের পেটানো হয়েছে, এমনকি রাইফেল বাট দিয়েও পেটানো হয়েছে তাদের।

এদিকে এ অভিযানের অংশ হিসাবে বুধবার ইসরায়েলি সেনারা রামাল্লার একটি শ্রমিক সংঘের অফিসে অভিযান চালায়। এরকম আরো কিছু ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের খবরও রয়েছে। সেইসঙ্গে রয়েছে ছাত্রদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তাদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close