প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১

মেয়েদের সমর্থনে স্কুলে যাচ্ছে না অনেক আফগান ছেলে

তালেবান আফগানিস্তানে শুধু ছেলে ও পুরুষদের স্কুলে ফিরতে বলেছে এবং মেয়েদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ও মাধ্যমিক পর্যায়ের মেয়েদের স্কুলে ফেরার প্রতি সমর্থন জানিয়ে স্কুলে ফিরছে না অনেক ছেলে। কেউ কেউ নানা বার্তা লিখে টুইটারে পোস্ট করেছে। যদিও এক তালেবান মুখপাত্র বলেছেন, শিগগিরই মেয়েদের স্কুল চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে আফগানরা তালেবানের ১৯৯০ দশকের কঠোর শাসন ফিরে আসার আশঙ্কা করছেন। ওই সময় মেয়েদের স্কুলে পড়া নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। খবর আলজাজিরা ও ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের।

আফগানিস্তানে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে শুক্রবার শুধু ছেলে ও পুরুষদের শ্রেণিকক্ষে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়। শনিবার প্রাথমিক স্কুলের অনেক মেয়ে শিক্ষার্থীও স্কুলে গেছে। তবে মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে পড়ুয়া মেয়েরা এখনো জানে না তাদের জন্য স্কুল খোলা হবে কি না। তালেবানের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে ছেলে শিক্ষার্থীরাও।

দশম শ্রেণির ১৮ বছরের রহুল্লাহ নামের এক ছাত্র বলে, নারীরা আমাদের সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী। মেয়েদের জন্য স্কুল খুলে দেওয়ার আগ পর্যন্ত আমি ক্লাসে যাব না।

শনিবার স্কুলে যেতে না পারা এক মেয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রশ্ন ছুড়ে দেয় ঠিক কী কারণে আমি স্কুলে যেতে পারব না। এক ভাই তার বোনের স্কুলে না যেতে পারার কারণে নিজে স্কুল না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি আপলোড করে সে জানিয়ে দেয়, আমার বোনের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি না মিললে আমি স্কুলে যাব না।

কাবুলের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক নাজিফে জানান, পুনরায় স্কুল চালুর জন্য তারা কিছু পরিবর্তন এনেছেন। তিনি বলেন, মেয়েরা সকালে এবং ছেলে দুপুরে ক্লাস করবে। পুরুষ শিক্ষকরা ছেলেদের এবং মেয়েদের পড়াবেন নারী শিক্ষকরা।

মেয়েদের মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ানো শিক্ষক হাদিস রিজায়ি বলেন, মেয়েদের মন ভেঙে গেছে এবং পড়াশোনা পুনরায় শুরুর জন্য তারা সরকারের ঘোষণার অপেক্ষায় আছে।

একটি স্কুলের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রেজা বলেন, মেয়েদের শিক্ষা হলো একটি প্রজন্মকে সঠিক পথে নিয়ে আসা। ছেলেদের শিক্ষা হয়তো পরিবারকে সহযোগিতা করে। কিন্তু মেয়েদের শিক্ষা পুরো সমাজকে প্রভাবিত করে। আমরা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি যাতে করে মেয়েরা স্কুলে ফিরতে এবং নিজেদের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করতে পারে।

ডেইলি আউটলুক-আফগানিস্তানের প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ সাখি রেজায়ি টুইটারে লিখেছেন, ‘শিক্ষা মেয়ে শিশুর মৌলিক মানবাধিকার। যদি নতুন তালেবান আন্তর্জাতিক চুক্তি ও সনদ মানে, তাহলে তারা অবশ্যই মেয়েশিশুদের স্কুলে ফিরিয়ে আনবে।’

ইউনিসেফ প্রধান হেনরিয়েটা ফোর মনে করেন, মেয়েদের অবশ্যই বাদ দেওয়া উচিত না। কোনো বিলম্ব ছাড়া বয়স্কসহ সব মেয়ের শিক্ষাগ্রহণ পুনরায় শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আফগানিস্তানে নারী শিক্ষকদের শিক্ষাদান আমাদের জারি রাখতে হবে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, আফগানিস্তানে মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে তারা গভীর উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফ বলেছে, সব বয়সী মেয়েদের জন্য আর দেরি না করে পুনরায় শিক্ষা শুরু করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close