প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি

লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন দেশটির কোটিপতি ব্যবসায়ী নাজিব মিকাতি। প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পাশাপাশি মিকাতির নেতৃত্বে ২৪ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের কার্যালয়। এতে দেশটির রাজনীতিতে বছরের বেশি সময়ের অচলাবস্থার অবসান হয়েছে। রাজধানী বৈরুতের বন্দরে রাসায়নিকের গুদামে বিপর্যয়কর বিস্ফোরণের জেরে আগের প্রশাসনের পতনের এক বছরেরও বেশি সময় পর একটি নতুন সরকার ঘোষণা করা হয়েছে। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।

২০২০ সালের ৪ আগস্টে বৈরুত বন্দরের রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কয়েক দিন পরই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াবের সরকার পতন ঘটে। তারপর থেকে লেবাননে এতদিন সঠিকভাবে কার্যকর কোনো সরকার ছিল না। এতে দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যায়।

দেশটিতে মুদ্রার মান পড়ে গেছে, বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। জ্বালানি, বিদ্যুৎ, ওষুধপত্র সবকিছুরই ঘাটতি দেখা দিয়েছে। উপরন্তু পুরোদস্তুর রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে প্রায় দুই বছর ধরে বিক্ষোভে টালমাটাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে দেশটিতে।

এমন পরিস্থিতিতে সাদ হারিরি সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হওয়ার পর গত ২৬ জুলাই নাজিব মিকাতিকে সরকার গঠনের দায়িত্ব দেন প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন। তারপর মিকাতি পার্লামেন্টের ১১৮ সদস্যের মধ্যে ৭৩ সদস্যের ভোট লাভে সমর্থ হন।

এক বছরের বেশি সময় পর শুক্রবার নতুন সরকার ঘোষণা হওয়ার পর, সব রাজনীতিবিদ এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নাজিব। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি খুব কঠিন। কিন্তু আমরা একতাবদ্ধ থাকলে সংকট কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব হবে না।’

নতুন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন আবদুল্লাহ বুহাবিব। অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ইউসুফ খালিল এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছেন ফিরাস আবাইদ। উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সায়াদা আশ শামি। নতুন সরকারের প্রথম দায়িত্বের মধ্যে থাকবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক নিরীক্ষা রক্ষণাবেক্ষণ এবং দেশের পতন রোধে উদ্ধার প্যাকেজের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে আলোচনা পুনরায় শুরু করা। নতুন মন্ত্রিসভা আগামী বছরের জন্য নির্ধারিত সাধারণ নির্বাচনের তদারকি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি দেশের নাটকীয় অর্থনৈতিক পতন থামাতে তার ক্ষমতা অনুযায়ী সবকিছু করার অঙ্গীকার করেছেন।

লেবাননে মূলত সরকার গঠন করতে হয় ধর্মীয় প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে, যেন সব ধর্মের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টন সম্ভব হয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারকে পৃথক পৃথক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের হতে হয়। দেশটির বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় একজন সুন্নি মুসলমানকে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদ অর্পণ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ম্যারোনাইট খ্রিস্টান এবং পার্লামেন্টের স্পিকার হন একজন শিয়া মুসলিম। ফলে সব পক্ষের অংশগ্রহণ ও সম্মতিতে সরকার গঠনের প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল। যে কারণে দেশটিতে সরকার গঠনে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয়ে পড়ে। ২০০৯ সালে সাধারণ নির্বাচনের পর সরকার গঠন করতে সময় লেগেছিল পাঁচ মাস। ২০১৩ সালের নির্বাচনের ১০ মাস পর গঠিত হয়েছিল সরকার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close