প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
সাংবাদিকদের ওপর খড়্গহস্ত তালেবান
আফগানিস্তানে বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গিয়ে তালেবানের হাতে আটক, মারধর ও বেত্রাঘাতের শিকার হচ্ছে দেশটির সাংবাদিকরা। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া বেশ কয়েকটি ছবিতে কাবুলে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ছাড়া পাওয়া দুই সাংবাদিকের ক্ষতবিক্ষত শরীর ও তাদের দেহে চাবুকের দাগ দেখা গেছে। এদের একজন তকি দারিয়াবি বলেছেন, তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল।
ওই দিন সাংবাদিক তকি দারিয়াবি ও আলোকচিত্রী নেমাতুল্লাহ নাকদি কাবুলে নারীদের বিক্ষোভ কভার করতে গিয়েছিলেন। তাদের দুজনকে আটক করে একটি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়; সেখানে তাদের লাঠি, বৈদ্যুতিক তার ও চাবুক দিয়ে পেটানো হয় বলে অভিযোগ।
কয়েক ঘণ্টা পর তালেবান এ দুজনকে ছেড়ে দেয়। দারিয়াবি বলেন, ‘তারা আমাকে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে যায় এবং আমার দুই হাত পেছনে নিয়ে হ্যান্ডকাফ দিয়ে বাঁধে। তারা আমাকে আরো বাজেভাবে মারতে পারে, এমনটা ভেবে নিজেকে মার খাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করব না বলে সিদ্ধান্ত নিই আমি। এ কারণে আমি এমনভাবে মেঝেতে শুয়ে পড়ি, যেন শরীরের সামনের অংশ রক্ষা পায়। তারা আটজন ছিল পুলিশের লাঠিসহ হাতের কাছে যা যা পেয়েছে তাই দিয়ে আমাকে পিটিয়েছে। আমার মুখে যে দাগ সেগুলো জুতার, তারা আমার মুখে লাথি মেরেছিল।
মারধরে অচেতন হয়ে পড়ার প্রায় দুই ঘণ্টা পর ছাড়া পান তিনি। নেমাতুল্লাহ নাকদি জানান, তিনি যখন বিক্ষোভের ছবি তুলতে শুরু করেন, তালেবান যোদ্ধারা তখন তার ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
ফ্রান্সভিত্তিক এক বার্তা সংস্থাকে এ আলোকচিত্রী সাংবাদিক বলেন, ‘এক তালেবান সদস্য আমার মাথায় তার পা তুলে দিয়েছিল, আমার মুখ কংক্রিটে ঠেসে ধরেছিল। তারা আমার মাথায় লাথি মারে। আমি ভেবেছিলাম, তারা আমাকে মেরে ফেলতে যাচ্ছে।’
কেন মারা হচ্ছে, তা জানতেও চেয়েছিলেন নাকদি। উত্তর এসেছে, ‘তোমার কপাল ভালো যে তোমার শিরñেদ করা হচ্ছে না।’
আফগান বার্তা সংস্থা টোলো জানিয়েছে, তালেবান তাদেরও এক ক্যামেরাম্যানকে তিন ঘণ্টা আটকে রেখেছিল।
নিউইয়র্কভিত্তিক কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) জানিয়েছে, কেবল দুই দিনেই তালেবান ১৪ সাংবাদিককে আটক করে। পরে অবশ্য সবাইকে ছেড়েও দেয় তারা।
এদিকে তালেবানের অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভার এক সদস্য বলেছেন, সাংবাদিকদের ওপর যেকোনো হামলা-নির্যাতনের ঘটনারই তদন্ত হবে। কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটির নতুন মন্ত্রিসভার এ সদস্য অবশ্য নিজের নাম প্রকাশে রাজি হননি।
"