আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আজারবাইজান-আর্মেনিয়া সংঘাত অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯৫

আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে টানা তৃতীয় দিনের মতো রক্তক্ষয়ী সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। গত রোববারের পর গত সোমবারও লড়াই চালিয়ে গেছে উভয় দেশের সেনারা। লাফিয়ে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। এরই মধ্যে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৯৫ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১১ জন বেসামরিক নাগরিক। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষের প্রতি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসপে তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, আর্মেনিয়াকে অবশ্যই আজারবাইজানের ভূখ- ছাড়তে হবে। অন্যদিকে এ সংঘাত থেকে তুরস্ককে দূরে রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আর্মেনিয়া। তবে এখনো পর্যন্ত সংঘর্ষ থামার সামান্যতম ইঙ্গিতও নেই। বরং গত রোববারের পর গত সোমবার লড়াই আরো ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এ সংঘর্ষে ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়। কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভূখ- হলেও আর্মেনিয়া সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। মূলত এ নিয়েই নতুন করে সংঘাতের সূত্রপাত। দীর্ঘ বিবাদের জেরে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ। এর আগে সর্বশেষ ২০১৬ সালে নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে বড় ধরনের সংঘাতে জড়ায় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। গত শনিবার নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাত যেন রীতিমতো যুদ্ধবস্থায় রূপ নিয়েছে। দুই দেশের সামরিক বাহিনী সীমান্তে জড়ো হয়েছে। লাগাতার গোলাগুলি চলছে। এই সংঘাতে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর বাইরে আজারবাইজানের কারাবাখ অঞ্চলের আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও রয়েছে। এখন পর্যন্ত সংঘাতে তাদেরই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জানিয়েছে, শুধু গত সোমবারের লড়াইয়ে তাদের ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার ও সোমবার মিলিয়ে এখন পর্যন্ত তাদের অন্তত ৮৪ বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া দুই দেশেই সামরিক আইন জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য সামরিক বাহিনীর বিশেষ আইন বলবৎ হয়েছে। সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ অবশ্য এই যুদ্ধ বন্ধের আবেদন জানিয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে গতকাল মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়। মূলত ফ্রান্স ও জার্মানির আবেদনের ভিত্তিতেই ওই রুদ্ধদ্বার বৈঠক আহ্বান করা হয়। রাশিয়া অবিলম্বে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ বন্ধের আবেদন জানিয়েছে। এ ব্যাপারে মস্কো তুরস্কের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে জানিয়েছে রুশ প্রেসিডেন্টের দফতর ক্রেমলিন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close