কনক দেব, শিবগঞ্জ (বগুড়া)
ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্বের খোঁজে মহাস্থান গড়ে খনন

বগুড়া শিবগঞ্জের ঐতিহাসিক মহাস্থান গড়ে পুনরায় শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-ফ্রান্সের যৌথ প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ। গত ১৮ জানুয়ারি থেকে মহাস্থান গড়ের দক্ষিণ-পূর্ব বৈরাগীর ভিটায় এ খনন কাজ চলছে। ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্বের অনুসন্ধান করতে চলছে এ উৎক্ষণনের কাজ। জানা গেছে চলতি মাসে এ খনন কাজ শেষ হবে।
মাসব্যাপী প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ দেখার জন্য গত ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি ম্যাসদুপিন মহাস্থান গড় পরিদর্শন করেন।
মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মহাস্থান গড় ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় খননে পাওয়া গেছে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্ননিদর্শন। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সরকার যৌথভাবে খনন কাজ পরিচালনা করে আসছে। পাশাপাশি প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর নিজস্ব অর্থায়নেও খনন কাজ করে আসছে। মাঝে করোনাকালীন সময়ে খনন কাজ বন্ধ থাকলেও ২০২০ সালের পর থেকে এটি প্রথম খনন কাজ।
গত ১৮ জানুয়ারি থেকে মহাস্থান গড়ের বৈরাগীর ভিটায় দক্ষিণ পূর্বস্থানে খনন কাজ শুরু হয়। এ যৌথ খননে ফ্রান্স দলের সাতজন বিশেষজ্ঞ প্রত্নবিদ নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্যদিকে পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ দলের পক্ষে প্রত্ন অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ড. নাহিদ সুলতানার সঙ্গে আছেন শাহজাদপুর জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান হাফিজুর রহমান, আলোকচিত্রী মোজাহার হোসেন ও সার্ভেয়ার আবদুল হালিম।
সূত্র মতে আরো জানা যায়, গত ২০২০ সালে বৈরাগীর ভিটায় খননের পর প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন মিলে। এবার ওই খনন স্থানে দক্ষিণপূর্ব স্থানে খনন করা হয়। খননকালে ৮টি কূপের সন্ধান মিলেছে, পাশাপাশি বেশকিছু মৃৎপাত্র, মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ, মাটির বড় একটি ডাবর (মটকা) পাওয়া গেছে। খননস্থলে পাওয়া স্থাপত্য কাঠামো এবং উত্তর অঞ্চলীয় উজ্জ্বল চকচকে কালো মৃৎপাত্র (এনবিপিডব্লিউ) দেখে খনন কাজে নিয়োজিতদের ধারণা এসব খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক থেকে পরবর্তী ১৪০০-১৫০০ শতকের।
খনন দলের সদস্য হাবিবুর রহমান স্বপন প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, মহাস্থান গড়ের প্রাচীনত্ব বিশ্ব স্বীকৃত। সে স্বীকৃতির নিদর্শন খুঁজে পাওয়ার আশায় প্রতি বছর খনন কাজ করা হচ্ছে। সেখানে যেসব প্রত্নতাত্ত্বিকসামগ্রীর নমুনা মিলছে তা প্রমাণ করে খ্রিষ্টের জন্মের আগেও জনপদ ছিল সমৃদ্ধ। তিনি আরো জানান, এবার খননে সেখানে পোড়ামাটির গুটিকা, মৃৎপাত্র, দেয়ালও পাতকুয়ার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। খনন কাজ শেষ হলে আরো বিস্তারিত জানা যাবে।
"