ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

  ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

পৃথক সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে একটি বিয়ে বাড়িতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তের গুলিতে চারজন আহত হয়েছেন। অপরদিকে জেলার সরাইলে জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় দুইজন নিহত হয়েছেন।

নবীনগরে বিয়ে বাড়িতে প্রতিপক্ষের গুলিতে আবদুল খলিল মিয়া (৫৫), ছেলে মো. আসিফ (২০), খলিল মিয়ার ভাই অলি মিয়া (৫০), ভাগ্নে নাছির মিয়া (২০) আহত হন। তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহত খলিল মিয়া নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি পশ্চিমপাড়া গ্রামের হিরু মিয়ার ছেলে। গত সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত অলি মিয়ার স্ত্রী সেলিনা বেগম সোমবার রাতে সন্ত্রাসী মনাকসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জনকে আসামি করে নবীনগর থানায় একটি মামলা করেছেন।

আহতদের স্বজনরা জানান, সোমবার খলিল মিয়ার ভাতিজার বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। সকালের দিকে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালায়। এতে খলিল মিয়া, তার ছেলে, ভাই ও ভাগ্নে গুরুতর আহত হন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, সোমবার সন্ধ্যার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসী জানান, মনাক এলাকার ভয়ানক সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা আছে। কিছুদিন আগে সেনাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। গত মাসে সে জামিনে বের হয়ে আসে।

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, সোমবার সকালে খলিল মিয়া ছেলেকে নিয়ে ভাতিজার বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান। এসময় পূর্বশত্রুতার জের ধরে মনাক ও তার ছেলেরা তাদের ওপর গুলি চালান। এতে গুলিবিদ্ধ হন বাবা-ছেলেসহ ৪ জন। মনাকের নামে মাদক, চুরি, ডাকাতি, হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অপরদিকে সরাইলে জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় আজাদ মিয়া (৫৫) ও আমানত মিয়া (৬০) নামে দুইজন নিহত হয়েছেন। পুলিশ ৪ জনকে আটক করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের বিশুতারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আজাদ মিয়া বিশুতারা গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে ও আমানত মিয়া একই গ্রামের মিছির আলী ছেলে। নিহতরা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। গ্রামের একটি বাড়ি নিয়ে চাচা-ভাতিজার বিরোধ ছিল।

এ বিরোধের জের ধরে গতকাল মঙ্গলবার সকালে আজাদ মিয়া তার দোকান খোলার সময় ইনসান মিয়া ও তার লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আজাদ মিয়াকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। এর জের ধরে আজাদ মিয়ার সমর্থকরা ইনসান মিয়ার পক্ষের আমানত মিয়ার উপর হামলা করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। ঘটনার পর পরই পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে। দুপুরে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করে। আটকরা হলেন-ইনসান মিয়ার ভাই ইমরান ও আরমান, একই গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম ও আবুল কাসেম মিয়ার ছেলে তাবারক মিয়া।

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় আজাদ ও আমানত নামের দুইজন নিহত হয়েছে। নিহত দুইজন চাচা-ভাতিজা। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা-জমি নিয়ে ঝামেলা চলছিল।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close