প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
দেশে এখন শিল্পীদের স্বাধীনতা!

শিল্পীসত্তার বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতার প্রবণতা অনেক দেশেই দেখা যায়। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। ইদানীং কয়েকটি ঘটনা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, শঙ্কাও জাগিয়েছে অনেকের মনে। গত বছরের ২৫ নভেম্বর যশোরের মণিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের পাড়দিয়া গ্রামে দুর্বৃত্তদের হামলায় প- হয় ফকির মন্টু শাহের লালন স্মরণোৎসব। মন্টু শাহ’র নিজ বাড়িতে প্রতি বছর দুই দিনের এ সাধু সংঘে অংশ নেন খুলনা বিভাগের অনেক বাউল শিল্পী। গত নভেম্বরে ফকির মন্টু শাহের লালন স্মরণোৎসবে হামলার ঘটনা ঘটে।
২০২৪ সালের ২ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরে ‘খুকি লাইফস্টাইল’ নামের একটি শোরুম উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। ‘রিয়াজউদ্দিন বাজারের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী ও তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে কিছু লোকের বাধার মুখে উদ্বোধন না করেই ঢাকায় ফিরতে বাধ্য হন মেহজাবীন। পরে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি ‘রিয়াজউদ্দিন বাজারের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী ও তৌহিদী জনতা’র বাধার বিষয়টি উল্লেখ না করে লিখেছেন ‘একটি শোরুম উদ্বোধনের জন্য চট্টগ্রামে গিয়েছিলাম। কিন্তু বিমানবন্দর থেকে শোরুমে যাওয়ার পথে শুনি নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু সমস্যা হয়েছে। তাই আয়োজক ও আমি নিরাপত্তার অভাবে শোরুমে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
গত ২৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের টিন মার্কেটে প্রসাধন পণ্য বিক্রির একটি শোরুম উদ্বোধনের কথা ছিল পরীমণির। কিন্তু জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের টাঙ্গাইল এবং কালিহাতী শাখার আপত্তির মুখে তারও শোরুম উদ্বোধন করা হয়নি। পরীমণিকে না আনতে দোকান সংশ্লিষ্টদের ফোন করে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। ফলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কায় অনুষ্ঠান বাতিল করেন সংশ্লিষ্টরা। ঢালিউডের আলোচিত এ নায়িকা অবশ্য নীরব থাকেননি। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘এত চুপ করে থাকা যায় নাকি! পরাধীন মনে হচ্ছে। শিল্পীদের এত বাধা কেন আসবে?
সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ উগড়ে দেওয়ার একদিন পরেই এক ব্যবসায়ীকে মারধর, খুনের চেষ্টা ও হুমকির পুরোনো মামলায় পরীমণির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। দুটি ঘটনার যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন অনেকেই। নির্মাতা আশফাক নিপুণ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মবের প্রতিবাদের মুখে পরীমণির দোকান উদ্বোধন করতে না পারার ক্ষোভ উদগীরণের পর পরই তার বিরুদ্ধে দায়ের করা পুরোনো মামলায় হাজিরা দিতে না যাওয়ায় গ্রেপ্তারের আদেশ জারি বড়ই কাকতালীয়।’
বাংলাদেশে শিল্পী-লেখকদের অধিকার চর্চার পথে বাধা সৃষ্টির ঘটনা আগেও ঘটেছে। দাউদ হায়দার এবং অনেক লেখক কবিকে তো বিদেশেই চলে যেতে হয়েছে। তবে অতি সাম্প্রতিক প্রবণতা একেবারে অন্যরকম। শিল্পীদের, বিশেষ করে নারী শিল্পীদের কোনো দোকান বা শোরুম উদ্বোধনে বাধা দেওয়ার ঘটনা তিনটি ঘটেছে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে।
মেহজাবীন ও পরীমণি ঢাকার বাইরে তোপের মুখে পড়ার পর চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস রাজধানীতেই বিরূপ পরিস্থিতি দেখেছেন। গত ২৮ জানুয়ারি ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে ‘সোনার থালা’ নামের একটি রেস্তোরাঁ উদ্বোধন করার কথা ছিল তার। তবে ‘স্থানীয় জনতা’র প্রবল চাপের মুখে তিনি পিছু হটতে বাধ্য হন। অতিথি হিসেবে নায়িকাকে আনা হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির হুমকি দেওয়া হয় রেস্তোরাঁ মালিককে।
মেহজাবীন, পরীমণি ও অপু বিশ্বাসকে একদল লোকের হুমকি-ধমকি দেওয়াকে সুস্পষ্ট মানবাধিকারের লঙ্ঘন মনে করেন অভিনেতা মামুনুর রশীদ। তিনি ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে তাদের কোনো শাস্তির ব্যবস্থা আমাদের দেশে নেই। এর আগে আমরা দেখেছি বাউলদের চুল কেটে দিয়েছে। শিল্পীরা একটা দোকান উদ্বোধন করবে, সেটাও পারছে না। এ যে গায়ের জোরে সবকিছু করা, এটা তো সুস্থ সমাজের লক্ষণ নয়। আমরা দেখেছি, মাজার ভাঙা হচ্ছে, এটাও তো ঘোরতর অন্যায়। মাজার ভাঙবে কেন? বাউলদের আখড়াও ভেঙে ফেলা হয়। কিছু মানুষ তাদের বিশ্বাস ও ভক্তি নিয়ে এসব জায়গায় যায়, তাদের সেই অধিকারটুকু ক্ষুণ্ণ করার অধিকার কিন্তু কারো নেই।’
মানবাধিকার সংগঠন আমরাই পারি জোটের প্রধান নির্বাহী জিনাত আরা হক ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘দেশের প্রত্যেক মানুষেরই মানবাধিকার আছে। শিল্পীর অধিকার বাদ দিয়ে মানবাধিকার নয়। তাই শিল্পীর অধিকার নিশ্চিত করা দরকার। অভিনেতা-গায়ক ফজলুর রহমান বাবু মনে করেন প্রত্যেকেরই তার ধর্মের স্বাধীনতা থাকতে হবে। অন্যের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা অত্যন্ত দুঃখজনক ও গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি। যদি কারো বিচারের প্রয়োজন হয়, তাহলে আদালত দেখবে। বিচার করার দায়িত্ব সাধারণ মানুষকে কেউ দেয়নি।’
ফজলুর রহমান বাবু ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘ধর্ম হলো বুকে ধারণ করার বিষয়। আর সৃষ্টিকর্তা তো প্রেমের কথা বলেছেন। তিনি ধ্বংসের কথা বলেননি। হানাহানি বা যুদ্ধের কথাও বলেননি। সৃষ্টিকর্তা ভালোবাসা, প্রেম ও শান্তির কথা বলেছেন। সংস্কৃতি মানে কিন্তু শুধু গান-বাজনা নয়। আমাদের জীবনযাপন, আচার-অনুষ্ঠান, সভ্যতা সবকিছু মিলিয়েই সংস্কৃতি।’
নাট্যকার মাসুম রেজা বলেন, ‘আমাদের দেশনাটকের ‘নিত্যপুরাণ’ যে তৌহিদী জনতার ব্যানারে কিছু লোকের কারণে মাঝপথে বন্ধ করা হয়েছিল, আমরা কি অন্যদের বঞ্চিত কিংবা বৈষম্য তৈরি করে নাটক করেছি? তাও তো না। তারপরও যারা এসব ঘটাচ্ছেন, তাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক চেতনা বলতে কিছু নেই।’ নওশাবা মনে করেন, নারী স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে ইদানীং। তিনি বলেন, ‘খেলাধুলা ও সংস্কৃতি আমাদের দেশকে বিশ্বদরবারে সম্মানের সঙ্গে তুলে ধরে। এগুলোকে আঘাত করার মানেই হলো উন্নতির পরিবর্তে দেশের ক্ষতি চাওয়া। যদি আমরা শিল্প-সংস্কৃতি ও খেলাধুলায় ব্যাঘাত ঘটাই, নারী স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করি, তাহলে দেশের ক্ষতি হবে। এগুলো কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি কিংবা ছোট পর্দার সংগঠন অভিনয়শিল্পী সংঘ এসব ঘটনায় কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। কিন্তু জিনাত আরা হক মনে করেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো উচিত। তার অভিমত, ‘আমরা সবসময় তাদের অধিকারের পাশাপাশি থাকব। আইনি সহায়তা চাওয়ার পাশাপাশি শিল্পীদের যেসব প্ল্যাটফর্ম আছে, তাদের খুবই সক্রিয়ভাবে প্রতিবাদ করতে হবে।
বাউল-সাধুদের ওপর গত কয়েকমাসে একের পর এক হামলার ঘটনায় সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশজুড়ে বাউলরা অনিরাপদবোধ করছেন। নরসিংদীর বেলাবতে বাউলদের আখড়ায় ২০২৪ সালের ৭ মে গান-বাজনার সময় বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী হামলা চালিয়ে বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর করে। ঠিক একমাস পর কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের আহমদপুর গ্রামে বাউল নিশান আলীর আখড়া ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আখড়াটিতে সন্ধ্যার পর গানের আসর বসাতেন বাউল-সাধুরা। গত বছরের ২২ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নরসিংহপুর গ্রামে তৌহিদী জনতার ব্যানারে হুমকি দেওয়ায় ‘সাধুসঙ্গ ও লালন মেলা’ বন্ধ হয়ে যায়। মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমি প্রাঙ্গণে হওয়ার কথা ছিল দুই দিনের ১১তম মেলাটি। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পরদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ শীর্ষক সমাবেশে অর্থনীতিবিদ-শিক্ষক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বাংলাদেশ বহুজাতি, বহুবর্ণ ও বহু বৈচিত্র্যের দেশ। বহু বৈচিত্র্য নিয়ে ঐক্য গড়ে উঠলেই সমাজ শক্তিশালী হয়। অন্যথায় বৈষম্য দানা বাঁধে। বৈষম্যের বিপক্ষে ও বৈচিত্র্যের পক্ষে দাঁড়াতে হবে আমাদের।’
গত বছরের ২৫ নভেম্বর যশোরের মণিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের পাড়দিয়া গ্রামে দুর্বৃত্তদের হামলায় প- হয় ফকির মন্টু শাহের লালন স্মরণোৎসব। মন্টু শাহ’র নিজ বাড়িতে প্রতি বছর দুই দিনের এ সাধু সংঘে অংশ নেন খুলনা বিভাগের অনেক বাউল শিল্পী।
গত ২৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের টিন মার্কেটে প্রসাধন পণ্য বিক্রির একটি শোরুম উদ্বোধনের কথা ছিল পরীমণির। কিন্তু বাধার মুখে উদ্বোধন করতে পারেননি।
যশোর বাউলিয়া সংঘের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ বাউল বলেন, ‘বাউলরা মুক্তমনের মানুষ। তারা ধর্ম, জাত, রাজনীতি বোঝে না। বাঙালি সংস্কৃতির শিকড় উপড়ে ফেলার অপচেষ্টা থেকে বাউলদের অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়।’
রাজনৈতিক পালাবদলের পর গত ছয় মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৮০টির বেশি মাজার শরিফ ও দরবার শরিফে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বিশ্ব সুফী সংস্থা নামের একটি সংগঠন গত ২৩ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ জানায়।
চলমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নানান সংকট দেখছেন মামুনুর রশীদ। তিনি ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘মৌলবাদীরা একটা ফুল ফ্রন্টে চলে আসছে। সেখানে আমাদের একটা আশার আলো ছিল যে, গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করবে। কিন্তু তার তো কোনো লক্ষণ এখনো দেখতে পাচ্ছি না। এখন যা অবস্থা তাতে যেকোনো সমস্যা হতে কতক্ষণ? সাধারণ মানুষ যেমন-তেমন, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও কী ধরনের নির্যাতন চলছে। এসব নিরসনে একটা গণতান্ত্রিক পদ্ধতি চালু হোক। একটা নির্বাচন হোক। নির্বাচনের মাধ্যমে একটা দল ক্ষমতায় আসুক। তখন আবার একটা চেষ্টা করা যাবে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা যে জায়গায় আছি সবাই সেই জায়গা থেকে প্রতিবাদ ও ভূমিকা রাখা উচিত। সেগুলো সঠিকভাবে পালন করতে পারলেই আমার মনে হয় উত্তরণ সম্ভব। সবশেষে এটাই বলতে চাই, গণতন্ত্রের ফেরাটা অত্যন্ত জরুরি।’
উত্তরণের উপায় খুব সহজ নয় মেনে ফজলুর রহমান বাবু বলেন, ‘আমাদের দরকার সঠিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চা। মানুষ যদি সংস্কৃতিবান ও প্রকৃত অর্থে শিক্ষিত হয় তাহলে তার মধ্যে কোনো ধরনের উগ্রবাদ তৈরি হবে না। প্রকৃত শিক্ষিত হতে হবে। এমএ পাস করলাম আর শিক্ষিত হয়ে গেলাম বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। যদি আমি প্রকৃত শিক্ষিত মানুষ হই, তাহলেই সংস্কৃতিবান হব। অন্যের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করব না। একটা শিক্ষিত জাতি আমাদের গড়ে তুলতে হবে। এটা একদিনের না, দীর্ঘদিনের কাজ। দ্বিতীয় কথা হলো-পারিবারিক শিক্ষা। এই যে বিভিন্নভাবে উগ্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে ও নানান মতবাদ তাদের মধ্যে একটা সঠিক বলছে তো আরেকটা সঠিক বলছে না এই যে বিভিন্ন ধরনের মতভেদ তৈরি হয়েছে, এগুলো থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে।’
মাসুম রেজা মনে করেন, এসব প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের দায়িত্ব শুরু থেকে সমস্তটাই সরকারের। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী অঙ্গীকার আছে এ সরকারের, এটি ঘোষিত। যাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক চেতনা নেই, সরকারের দায়িত্ব তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া। এটাই প্রধান কাজ। বৈষম্যহীন প্রতিশ্রুতি নিয়ে এ সরকার এসেছে, ফলে এসব ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব তাদের। সমাজে মেয়েদের স্বাধীনতা ও শিল্পের যথাযথ চর্চা হওয়া জরুরি।’
তৌহিদী জনতার ব্যানারে নারীদের বাধা দেওয়ার বিষয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী ডিডাাব্লিউকে বলেন, ‘আমরা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। এগুলো হলো সামাজিক প্রেক্ষাপট। নায়ক-নায়িকাদের ব্যাপার স্পর্শকাতর। আমরা কিন্তু কাউকে বাধা দিচ্ছি না। তবে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের দেশে নায়িকাদের প্রকাশ্যে এনে এসব কাজ করানো ঠিক না।
আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী ডিডাাব্লিউকে বলেন, ‘আমাদের দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতি বিবেচনা করে নায়িকাদের এসব কর্মসূচি থেকে বিরত থাকা উচিত। মুসল্লিদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আসে, এমন কিছু করা ঠিক না।’
মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী সাভারের জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসার প্রিন্সিপাল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। জনগণের ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত আসে এমন কোনো কর্মসূচি না দেওয়াই ভালো। তৌহিদী জনতার ব্যানারে যারা বাধা দিচ্ছেন তাদের বলতে চাই, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। মানুষকে বুঝিয়ে ও সমঝোতার মাধ্যমে ইসলামিক ও শরীয়তের বিষয় অভ্যস্ত করতে হবে।’
অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ ডিডাাব্লিউকে বলেন, ‘কারো ভিন্নমত শুনলেই, কারো মধ্যে ভিন্নতা দেখলেই তাকে বাধার সম্মুখীন হতে হবে, এটা কাঙ্ক্ষিত নয় মোটেই।’
নওশাবার বিশ্বাস, ‘মেয়েদের খেলা বেশি বেশি আয়োজন করতে হবে। বেশি করে সিনেমা নির্মাণ, থিয়েটার ও উৎসবের আয়োজন করতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের শিল্পী সমাজের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আমরা যেন নিজেদের স্বাধীনতার চর্চা পরিমিতিবোধের সঙ্গে করি।’
"