সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
সরকারি জায়গা ভাড়া দিয়ে মাসে হাতান লাখ টাকা

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের সরকারি কোয়ার্টারের জায়গায় দোকান ভাড়া দিয়ে মাসে লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাসুদুর রহমান নামের এক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে। মাসুদুর রহমান নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অফিস সহকারী কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে গত ১৭ বছর ধরে কর্মরত রয়েছেন। তার বদলি নেই, ম্যানেজ করে একই অফিসে আছেন ১৭ বছর।
ঘটনা দেখতে গত ২৭ জানুয়ারি সরেজমিনে গিয়ে সত্যতা পাওয়া যায় এসব ঘটনার। দেখা গেছে, অফিস সহকারী কম্পিউটার অপারেটর মাসুদুর রহমান সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগে কর্মরত থাকায় সরকারিভাবে তাকে বসবাস করার জন্য কোয়ার্টার দেওয়া হয়। ওইখানে জানা গেছে, মাসুদুর রহমান তার নিজ এলাকায় কর্মস্থল হওয়ায় সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সরকারিভাবে দেওয়া কোয়ার্টারের জায়গায় মোটা অংকের টাকা অগ্রিম নিয়ে দোকান ভাড়া দিয়েছেন। সেখানে প্রায় ১০টি দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। আরো জানা গেছে, সরকারিভাবে কোয়ার্টারে রান্নার জন্য গ্যাস ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও সেখানে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। সেখানে কোয়ার্টারের গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে ভাড়া দেওয়া বেকারিতে। যার মাসিক ভাড়া লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন অফিস সহকারী মাসুদুর রহমান। তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে। তিনি নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের বাইরে সওজের পশ্চিম পাশে অস্থায়ীভাবে প্রায় ৩০টি টং দোকান বসিয়েছেন। মসজিদের নাম বলে প্রতিটি দোকান থেকে মাসুদুর রহমান দৈনিক ৫০-১০০ টাকা করে চাঁদা নেন। গোপন সূত্রে জানা যায়, এ চাঁদাবাজির টাকা মাসুদুর রহমানসহ আরো বেশ কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা ভাগাভাগি করে নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, তিনি (মাসুদুর রহমান) দীর্ঘদিন ধরে এখানে চাকরি করছেন। সরকারিভাবে দেওয়া জায়গা ভাড়া দেওয়া অন্যায়। যতটুকু জানি তার সঙ্গে আরো কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে মাসুদুর রহমানের সঙ্গে জড়িত ওই কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি। এদিকে বিষয়টি স্বীকার করে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগে কর্মরত কম্পিউটার অপারেটর মাসুদুর রহমান বলেন, সরকারি জায়গায় কেউ স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারে না। আমি অন্য জায়গায় থাকি তাই সরকার আমাকে থাকার জন্য যে জায়গা দিয়েছে সেখানে আমি দোকান করে ভাড়া দিয়েছি। আমারও তো সংসার আছে। সরকারের যখন প্রয়োজন হবে তখন ভেঙে দিব। কোয়ার্টারে রান্না করার গ্যাস বেকারিতে ভাড়া দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, আমি ১৭ বছর ধরে এখানে চাকরি করছি। সবাইকে ম্যানেজ করেই এখনো টিকে রয়েছি। ম্যানেজ না করে চললে দীর্ঘদিন থাকতে পারতাম না। তাই সংবাদ প্রকাশ না করতে প্রতিবেদককে আর্থিক সুবিধারও প্রস্তাব দেন ওই অফিস সহকারী মাসুদুর রহমান।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী হাসানউল্লাহ মজুমদার মুঠোফোনে এ বিষয়ে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি বাইরে আছি, অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব বলে জানান তিনি।
"