শাহ্ আলম খান, চাঁদপুর

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫

মেঘনায় মিলছে না ইলিশ ধরা পড়ছে জাটকা

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশ মানেই স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয়। শীত মৌসুমে প্রতি বছরই মেঘনায় ইলিশের প্রাপ্যতা কম থাকে। তবে এ বছর একেবারে কমেছে ইলিশের আমদানি। দিন ও রাতে স্থানীয় জেলেরা নদীতে চষে বেড়ালেও ইলিশের দেখা মিলছে না। তবে ছোট (১০ ইঞ্চির নিচে) সাইজের জাটকা পাওয়া গেলেও দাম চড়া। ৩৮-৪০ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে জাটকা ইলিশ।

চাঁদপুর সদরের বিভিন্ন বাজার, মাছঘাট ও হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী সবচেয়ে বড় মাছের আড়ত ঘুরে জানা গেছে ইলিশের দরদাম এবং মেঘনায় ইলিশের বিচরণের বিভিন্ন তথ্য।

জেলা শহরের ওয়ারলেছ মাছবাজার ঘুরে দেখা গেছে কয়েকজন ব্যবসায়ী জাটকা বিক্রি করছেন। সাইজে ৭-৮ ইঞ্চি হবে। প্রতি কেজি দাম চাইলেন ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা। আরেক ব্যবসায়ী বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ১ হাজার টাকা। রাবেয়া বেগম নামে একজন ক্রেতা জানালেন, বাজারে ইলিশের দেখা নেই। যে কারণে তিনি এক কেজি জাটকা কিনেছেন ৮৫০ টাকা দিয়ে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার বহরিয়া মাছ ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে ইলিশ নেই। শুধু ছোট ছোট চিংড়ি পোনা বিক্রি হচ্ছে। ওই ঘাটের ইলিশের আড়তগুলো ফাঁকা পড়ে আছে।

হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী ইউনিয়নের মাছঘাট এলাকার জেলে করিম মিয়া ও শাহাবুদ্দিন বলেন, নদীতে পানি কম। সারা দিন নদীতে থাকলেও ইলিশ পাওয়া যায় না। যে কারণে এখন ছোট মাছ ধরি। ঋণ আছে, সংসার চালাতে হয়। যে কারণে ছোট মাছ ধরেই সংসার চালাতে হচ্ছে।

সদর উপজেলার হরিণা ফেরিঘাট সংলগ্ন মাছঘাটে রয়েছে প্রায় ১৪টি ইলিশের আড়ত। কিন্তু পুরো আড়তগুলোই এখন নীরব। কিছু জেলে জাটকা সাইজের ইলিশ নিয়ে আসছে। মুহূর্তেই ওইসব ইলিশ হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এ আড়তের পাইকার ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন জানান, বড় সাইজের ইলিশ নেই। ছোট সাইজের প্রতি হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা।

হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী মাছঘাটের ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া বলেন, শীত মৌসুমে নদীতে পানি কমে যায় এবং নদীর বিভিন্নস্থানে চর জেগে ওঠে। এ কারণে ইলিশ কম পাওয়া যায়।

তিনি আরো বলেন, এখন ছোট ছোট বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিক্রি করেই আমাদের আড়তগুলো চালু আছে। নদীতে এখন ইলিশ নেই বললেই চলে। ছোট সাইজের কিছু ইলিশ পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি। সারা দিনে প্রায় ২০টি আড়তে দুই থেকে তিন মণ ইলিশ বিক্রি হয়।

চাঁদপুর মাছঘাটের আড়তদার ওমর ফারুক বলেন, শীত মৌসুমে মেঘনায় ইলিশ খুবই কম। সবগুলো আড়ত মিলিয়ে এখন ১০ থেকে ১২ মণ ইলিশ বিক্রি হয়। তাও সাইজে ছোট। জাটকা সাইজের ইলিশের মণও ৩৮ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, প্রতি বছরই শীত মৌসুমে নদীতে ইলিশ কম থাকে। যে কারণে ছোট-বড় যে সাইজের ইলিশই জেলেরা ধরে আনেন, তার দাম চড়া হয়। তবে আগামী মে মাসের পর থেকে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ তখন জাটকাগুলো সাইজে বড় হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close