পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫

মাদরাসার সাইনবোর্ড দিয়ে বনের জায়গা দখল

কক্সবাজারের পেকুয়ায় মাদরাসার সাইনবোর্ড দিয়ে ধর্মীয় অনুভূতি ব্যবহার করে একটি ভূমিদস্যুচক্র দখলে নিয়েছে বনের ১ একর জায়গা। চক্রটি চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ওই জায়গায় এরই মধ্যে তৈরি করে ফেলেছে একটি কুঁড়েঘর। সেখানে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে মাদরাসার সাইনবোর্ড। উপজেলার টইটং ইউনিয়নের গুদিকাটার পূর্বদিকে চেপ্টামোড়ার পশ্চিমে বন বিভাগের গহীন অরণ্যে এভাবেই বন দখলের চেষ্টা শুরু হয়েছে।

সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে, টইটংয়ের গুদিকাটার পূর্বদিকে পাহাড়ের গলাচিরা অংশে নতুন করে ১ একর জায়গা জবরদখল চেষ্টা চলছে। একটি প্রভাবশালী ভূমিদস্যুচক্র বনের ওই জায়গার নিয়ন্ত্রণ নিতে সেখানে ‘গুদিকাটা হামিউছুন্নাহ নুরানী মাদরাসার সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছে।

স্থানীয় রহিম উল্লাহ জানান, জায়গাটি বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন সম্পত্তি। বন বিভাগ ওইস্থানে অংশীদারিত্ব বনায়ন সৃজন করে। টইটং বনবিট থেকে ওই স্থানটির দূরত্ব হবে মাত্র ১০ চেইন। বারবাকিয়া রেঞ্জের অধীনে টইটং বনবিট কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিকটবর্তী হলেও সেখানে জবরদখল তৎপরতা চলমান রয়েছে।

স্থানীয়রা আরো জানান, চক্রটি বন বিভাগের স্থানীয় বিট কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে সেখানে প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে ১ একর জায়গায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেছে। দেখা গেছে, হামিউছুন্নাহ নুরানী মাদরাসার নামে গুদিকাটার স্থানীয় এখলাছুর রহমান নামের এক ব্যক্তি সেখানে কুঁড়েঘর নির্মাণ করেছে। ছড়ের বেড়া ও পলিথিনের ছাউনি দিয়ে অনেকটা তড়িঘড়ি করেই কুঁড়েঘরটি নির্মাণ করে।

এদিকে গুদিকাটাসহ চেপ্টামোড়ার ওই অংশে বন বিভাগের সামাজিক বাগান সৃজিত রয়েছে। জবরদখলে বনজগাছের সৃজিত বাগানও উজাড় হচ্ছে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জের আওতাধীন টইটং বনবিটের অধীনের ১ একর জায়গা বেহাত হওয়া নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণ ও অংশীদারিত্ব বনের উপকারভোগীরা উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়েও কোনো সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ তাদের। অপরদিকে বন বিভাগের নাকের ডগায় বনের জায়গা বেহাত হওয়া নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে বনের জায়গায় কুঁড়েঘর নির্মাণ করে জবরদখল চেষ্টাকারী এখলাছুর রহমান জানান, জায়গাটি বন বিভাগের। তবে লেখাপড়ার স্বার্থে জায়গাটি বেছে নিয়েছি। কারো কাছ থেকে অনুমতিও নিইনি। আপত্তি থাকলে স্থাপনা সরিয়ে ফেলব।

এ ব্যাপারে টইটং বনবিট কর্মকর্তা জমির হোসেন জানান, বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। আমি জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব। অবশ্যই বন বিভাগের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনাটি উচ্ছেদ করা হবে। চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, আমি এখনই খবর নিচ্ছি। কোনো অবস্থাতেই বনের জায়গা বেহাত হতে দেওয়া যাবে না। জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close