হামিদুর রহমান, মাধবপুর (হবিগঞ্জ)

  ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

হবিগঞ্জের মাধবপুর

পর্যটনের অপার সম্ভাবনা

নৈসর্গিক সৌন্দর্যরূপ ও প্রাকৃতিক লীলাভূমি হচ্ছে সিলেট বিভাগের প্রবেশদ্বার হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা। এখানে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। মাধবপুরে রয়েছে প্রাকৃতিক নানা নৈসর্গিক দৃশ্য। রয়েছে পাহাড়, হাওর, রাবার বাগান, চা বাগান, শাহজিবাজার ফ্রুটস ভ্যালি, তেলিয়াপাড়া চা বাগান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বুলেট এবং পাশেই রয়েছে লাল শাপলা লেক।

মাধবপুরে এসব সৌন্দর্যময় জায়গা দেখতে খুব সহজেই যে কেউ সড়ক ও রেলপথ আসতে পারেন। রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক ও রেলপথে আসতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতা ও সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের কারণে মাধবপুরে এখনো সেভাবে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটেনি। পর্যটনের বিকাশ ঘটলে সরকার ও উদ্যোক্তরা এ খাত থেকে অনেক অর্থ আয় করতে পারত। পর্যটকদের জন্য হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ, থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করলে মাধবপুরে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ভ্রমণ পিপাসুদের সংখ্যা অনেক বেড়ে যেত। চৌমুহনী খুর্শিদ হাইস্কুল এন্ড কলেজ’র অধ্যক্ষ মোহন মিয়া বলেন, মাধবপুর উপজেলা পর্যটক শিল্পের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি ও শিল্পের পরই মাধবপুরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।

শাহজিবাজার প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। এখানে রয়েছে হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ড, ফ্রুটস ভ্যালি, রাবার বাগান, সোনাই রাবার ড্যাম। ফ্রুটস ভ্যালিতে দেখার মতো হচ্ছে সব রকমের ফুল ও মৌসুমি দেশি-বিদেশি ফলের বাগান। যা সহজেই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের মন কাড়ে। প্রতি বছর শাহজিবাজার প্রাকৃতিক নৈসর্গিক দৃশ্য দেখতে দেশের নানাপ্রান্ত থেকে পর্যটকরা ঘুরতে আসেন। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে এসব জায়গা অবস্থিত বলে যোগাযোগব্যবস্থা খুবই আনন্দদায়ক।

ঢাকা সিলেট রেললাইন পার হলেই চোখ পড়বে সবুজ গালিচার চা বাগান। দেখে মনে হবে কোনো নামকরা শিল্পী ছবির আলপনা এঁকে রেখেছে। চা বাগানের দৃশ্য যেকোনো পর্যটকের মন আকর্ষণ করবে। চা বাগান কর্তৃপক্ষ পর্যটকের জন্য সুযোগ-সুবিধা করলে চা বাগান এ শিল্প থেকে অনেক টাকা আয় করার সুযোগ রয়েছে। কারণ চা বাগান এখন শুধু চা চাষ করে তেমন লাভবান হচ্ছে না। চা চাষের পাশাপাশি চা বাগানে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানোর এখনই উপযুক্ত সময়। মাধবপুর উপজেলার ৫টি চা বাগানে যাওয়ার যোগাযোগব্যবস্থা খুবই উন্নত। তেলিয়াপাড়া চা বাগানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত জায়গা। লাল শাপলা শোভিত লেকের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের লাল বুলেট। লাল শাপলার লেক পর্যটকদের খুব আকৃষ্ট করবে। এছাড়া রয়েছে চৌমুহনী রাবার ড্যাম। সোনাই নদীতে রাবার ড্যামের পানিতে সাঁতার কাটতে ভিড় জমায় মানুষ। সোনাই নদী রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, রাবার ড্যাম এ অঞ্চলের একটি দর্শনীয় আকর্ষণীয় স্থান। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা গেলে পর্যটক আরও বৃদ্ধি পেতো।

চৌমুহনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ বলেন, মাধবপুর পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানোর অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এর বিকাশ ঘটলে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ভ্রমণ পিপাসুদের ঢল নামবে। কিন্তু প্রয়োজন সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ। পর্যটকদের জন্য প্রয়োজন হোটেল, মোটেল, রেস্তুুরাঁ, ও নিরাপদ নিরাপত্তা। তেলিয়াপাড়ায় পর্যটকদের থাকার জন্য টিল্যান্ড নামে একটি পর্যটক ভবন করা হয়েছে। এখানে ভ্রমণ পিপাসুরা রাতে থাকার ও খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে পর্যটকদের ভিড় বাড়াতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ বিন কাসিম বলেন, মাধবপুরে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। কারণ মাধবপুরে প্রাকৃতিক যে নৈসর্গিক স্থান রয়েছে। তা অতুলনীয়। মাধবপুরে যাতে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটে সরকারিভাবে পর্যটন শিল্প ও করপোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close