নাচোল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

নাচোলে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। উপজেলার কসবা ইউনিয়নের কালইর (কাঁঠালপাড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই গৃহবধূর নাম মুসলেমা বেগম (২৫)। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

মুসলেমার শ্বশুর ফজলুর রহমান এ প্রতিবেদকে জানান, পরিবারের লোকজন দেখতে পেয়ে তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় ফ্যান থেকে নামান। তখনো তিনি জীবিত ছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে পল্লী চিকিৎসক ইসমাইল হককে ডাকলে এসে দেখার পর বলেন, তিনি মারা গেছেন। ফজলুর রহমান জানান, ‘কসবা ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান জাকারিয়া আল মেহরাবকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। কিছুক্ষণ পর নাচোল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী মোস্তাকিনকে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাকে ছেড়েও দেওয়া হয়।’

ফজলুর রহমান আরো বলেন, আমার ছেলের বউ বংশগতভাবে ভারসাম্যহীন, দুই বছরের একটি বাচ্চা ছেলে রয়েছে। মৃতের বাবা, মামা তারাও ভারসাম্যহীন বলে দাবি করেন তিনি। মুসলেমা দীর্ঘদিন ধরে ভারসাম্যহীন ছিল, এর কারণে তার মৃত্যু ঘটাতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। কিন্তু মৃতের পরিবার ছাড়া আর কেউ গলায় দড়ি বা ফাঁসি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেননি বলে গ্রামবাসীরাও জানান। মৃত মুসলেমা একই উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের কামারজগইল গ্রামের মৃত জুদ্দিন আলীর মেয়ে। ৭ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল।

এদিকে নিহতের মা, ভাই বলছেন অন্য কথা। মৃতের মা বলেন, কয়েকদিন ধরে আমার মেয়েকে মারধর করে আসছে জামাই মোস্তাকিন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায়ও আমার মেয়ে মুসলেমা ফোন অনেক কান্নাকাটি করে বলে, মা তোমরা এসে আমাকে নিয়ে যাও। নই তো ওরা আমাকে কোন সময় মেরে ফেলতে পারে। কথা বলার প্রায় ১ ঘণ্টা পর মৃতের শশুর ফজলুর রহমান ফোন করে বলেন যে আপনার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমরা গিয়ে দেখি মুসলেমার লাশ নিচে পড়ে আছে। মৃতের মা এবং তার পরিবার দাবি, মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। এটা পূর্বপরিকল্পিত। তাদের মেয়েকে মেরে ফেলেছে জামাই মোস্তাকিন এবং তার পরিবারের লোকজন।

এ বিষয়ে নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের মোস্তাকিনকে থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পোস্টমর্টেমের পরই জানা যাবে আসল রহস্য, হত্যা না আত্মহত্যা। তবে থানায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close