নিজস্ব প্রতিবেদক
কামরুল-পলক আরো ৪ মামলায় গ্রেপ্তার
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ পাঁচজনকে লালবাগ, যাত্রাবাড়ী, কাফরুল ও ভাষানটেক থানায় করা চারটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অন্য তিন আসামি হলেন- পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, যুবলীগ নেতা আবুল হোসেন ও নজরুল ইসলাম কবিরাজ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের আদালতে হাজির করে পৃথক চারটি আবেদন করলে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমান এ আদেশ দেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুর ঘটনায় ১৯ জুলাই লালবাগ থানায় করা মামলায় কামরুল ইসলাম, আবুল হোসেন ও নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এদিন কামরুল ইসলামকে লিটফের পরিবর্তে পায়ে হেঁটে আদালতে হাজির করানোয় তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে চিৎকারও করেন।
নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য বিক্রির অভিযোগে গত বছরের ৭ অক্টোবর কাফরুল থানায় সাইবার সিকিউরিটি আইনে করা মামলায় পলককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ নিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বিভিন্ন থানায় দায়ের করা ৫৪টি মামলায় পলককে গ্রেপ্তার দেখানো হলো। গত ৫ আগস্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় দিগন্ত ফিলিং স্টেশনের সামনে পোশাকশ্রমিক মো. ফজলুর মৃত্যুর ঘটনায় ভাষানটেক থানায় করা মামলায় চৌধুরী মামুন ও পলককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ৪ আগস্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ীর কাজলায় সাব্বির হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় মামুনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গতকাল শুনানি চলাকালে পাঁচ আসামিকেই কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়।
এদিকে এজলাসে লিফটে না তুলে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে নেওয়ায় পুলিশের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল ইসলাম। গতকাল বুধবার সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের উদ্দেশে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের লিফট কি নষ্ট? এত ওপরে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটানো হচ্ছে কেন, ফাজলামি? দুইতলায় বলে চারতলায় উঠাইতেছেন। ইতরামির একটা সীমা আছে।’ রাজধানীর লালবাগ থানার মো. আলী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার শুনানিতে আদালতের এজলাসে তোলা হচ্ছিল আওয়ামী লীগ নেতাকে। লিফটে না তুলে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে নেওয়ায় চটে গিয়ে নিরাপত্তাদানকারী পুলিশ সদস্যদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী।
কামরুল ইসলামকে সকাল ৯টার আগেই প্রিজনভ্যানে করে আদালতে আনা হয়। এরপর তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর বিভিন্ন থানার হত্যা মামলার শুনানির জন্য তাদের এজলাসে তোলা হয়। এ সময় নিরাপত্তা দিতে সারিবেঁধে পুলিশ হাজতখানা থেকে কোর্টের সিঁড়ি পর্যন্ত ব্যারিকেড তৈরি করে। পরে কামরুলকে মাথায় হেলমেট, হাতে হাতকড়া আর বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে সরাসরি আদালতে তোলা হয়। কিন্তু আদালতের সিঁড়ি দিয়ে তোলার সময় বাধে বিপত্তি। আদালতের লিফটে না তুলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের চার তলায় তোলা হয় তাদের। এ সময় আসামিদের নিরাপত্তাদানকারী পুলিশ সদস্যদের ওপর চটে যান কামরুল ইসলাম। তখন ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে চিৎকার করে কথা বলেন তিনি। পরে কামরুল ইসলামকে পুলিশ সদস্যরা সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার সময় হাত ধরে সহায়তা করেন।
এ ঘটনায় সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক বলেন, লিফটের সামনে অনেক সময় বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ, আইনজীবীদের ভিড় থাকে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে, কোনোরকম ঝামেলা এড়াতে অনেক সময় সিঁড়ি দিয়ে তোলা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী আরো বলেন, আর আদালতে এলেই তিনি পুলিশের সঙ্গে ঝগড়া করেন। কখনো আইনজীবীদের সঙ্গে ঝগড়া বাধান। আবার কখনো উচ্চবাচ্য বক্তব্য দেন। এটা ওনার স্বভাবজাত অভ্যাস।
"