ইবি প্রতিনিধি

  ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

তিন বছর ধরে নষ্ট পানির প্লান্ট

* মেলেনি প্রশাসনের আর্থিক অনুমোদন * দফায় দফায় আন্দোলনে সুরাহা হয়নি * শিক্ষার্থীদের ভরসা অগভীর নলকূপ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুটি পানির প্ল্যান্ট পরিচর্যা ও মেরামতের অভাবে দীর্ঘ ৩ বছর ধরে অকেজো পড়ে রয়েছে দুটি পানির প্ল্যান্ট। এভাবে পড়ে থাকায় প্রতিনিয়ত প্ল্যান্টগুলোর স্থায়িত্ব নষ্ট হচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা দফায় দফায় আন্দোলন ও বিগত প্রশাসনের নিকট একাধিকবার স্মারকলিপি দিলেও কোনো সমাধান মেলেনি। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে পানির প্ল্যান্টগুলো মেরামতের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে বিশুদ্ধ পানির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও অনুষদ ভবনে প্ল্যান্ট দুটি স্থাপন করা হয়েছিল। পরে করোনাকালীন দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় পরিচর্যার অভাবে প্ল্যান্টগুলো নষ্ট হয়। ক্যাম্পাস খোলার পর ২০২১ সালের নভেম্বরে ঠিক করা হলেও মাস দুয়েকের মাথায় এগুলো আবার নষ্ট হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে মানববন্ধন, স্মারকলিপিসহ নানাভাবে দাবি জানিয়ে এলে বারবার আশ্বস্ত করেও প্ল্যান্টগুলো ঠিক করেনি কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করে আন্দোলন করলেও ফল হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পানির প্ল্যান্টগুলো ৩ মাস অন্তর কমপক্ষে একবার পরিষ্কার করতে হয়। এসব প্ল্যান্টে পানির শতকরা ২৫ ভাগ রিফাইন হয়ে পুরোপুরি পরিশুদ্ধ পানি বের হয়। যা বাজারে বিক্রি হওয়া সাধারণ মিনারেলযুক্ত পানির চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বিশুদ্ধ ও স্বাস্থ্যসম্মত। তাই শুধু ক্লাস চলাকালে পানের পাশাপাশি হলে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরাও এখান থেকে নিয়মিত পানি সংগ্রহ করতেন। কিন্তু পরিচর্যা ও মেরামতের অভাবে প্ল্যান্ট দুটি বন্ধ থাকায় গত ৩ বছর ধরে এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে ঝুঁকি নিয়ে অগভীর নলকূপের পানি পান করছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের তানজিল হোসাইন বলেন, পানির প্ল্যান্ট চালুর দাবিতে বেশ কয়েকবার ভিসি স্যারের নিকট গেলেও কোনো আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের অবহেলায় দীর্ঘদিন ধরে এগুলো বিকল হয়ে আছে। শিক্ষার্থীদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে দ্রুত প্ল্যান্টগুলো চালুর দাবি জানাচ্ছি।

ইংরেজি বিভাগের জোবায়ের হোসেন বলেন, বিগত সময়ে প্রশাসন শিক্ষার্থী দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত ছিল। আমরা চাই নতুন প্রশাসন শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে দ্রুত প্ল্যান্টগুলো মেরামত করুক।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী একেএম শরীফ উদ্দিন বলেন, প্ল্যান্টগুলো সংস্কারে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ২ বছর আগে নোট দিয়েছিলাম। কিন্তু আর্থিক অনুমোদন না পাওয়ায় প্ল্যান্ট দুটি আর ঠিক করা সম্ভব হয়নি। ফাইলটি এখনো রেজিস্ট্রার অফিসে আটকে আছে। নতুন প্রশাসনের সঙ্গে এখনো আলোচনা হয়নি। আমরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, গত প্রশাসনের সময় কি হয়েছিল জানি না। আমার কাছে এখনো এ সংক্রান্ত কোনো ফাইল আসেনি। যেহেতু এটা শিক্ষার্থীদের একটা জরুরি প্রয়োজন, ফাইল এলে কীভাবে দ্রুত অনুমোদন দেওয়া যায় সেটা দেখব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close