প্রতিদিনের ডেস্ক
সিরীয়দের প্রত্যর্পণে ইউরোপকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জাতিসংঘের
বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরীয় শরণার্থীদের প্রত্যর্পণে ইউরোপীয় দেশগুলোকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়। সিরিয়ার পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত থাকায় শরণার্থীদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে বলে গত সোমবার মন্তব্য করেছেন সংস্থাটির প্রধান ফিলিপো গ্র্যান্ডি । ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। তিনি বলেছেন, মাঠপর্যায়ে পরিস্থিতি ইতিবাচকভাবে উন্নতি করবে বলে আশা করছি। তবে সংশ্লিষ্টদের ধৈর্য ধরে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন, যেন শরণার্থীরা নিজ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে যেতে পারেন।
আসাদের পতনের পর কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ সিরীয়দের আশ্রয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত স্থগিত করার ঘোষণা দিলে গ্র্যান্ডি এ মন্তব্য করেন।
রবিবার এক ঝটিকা অভিযানে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে বিদ্রোহীরা। এর মধ্য দিয়ে ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের পর সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫ দশকের শাসনের অবসান ঘটায়।
যুদ্ধে কয়েক লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৪ মিলিয়ন মানুষ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন, যা আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম শরণার্থী সংকটে পরিণত হয়। শরণার্থীদের অনেকেই সরকারি নিপীড়নের ভয়ে ইউরোপে আশ্রয়ের আবেদন করেন। আল-আসাদের পতনের পরদিনই জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়ামসহ একাধিক ইউরোপীয় দেশ সিরীয়দের আশ্রয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত স্থগিত করার ঘোষণা দেয়।
তবে সিরিয়ার বর্তমান নেতারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অগ্রাধিকার দেয় কি না, তার ওপর শরণার্থীদের ফেরার সম্ভাবনা নির্ভর করবে বলে মন্তব্য করেছেন গ্র্যান্ডি। তিনি বলেছেন, সব সিরীয়ের অধিকার, জীবন ও আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করে এমন একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেন মানুষ নিরাপদবোধ করতে পারে।
আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর প্রথমদিকে বক্তব্যে দেশের বাইরে থাকা নাগরিকদের ফিরে দেশ পুনর্গঠনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানায় বিদ্রোহীরা। মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে সবচেয়ে বেশি সিরীয় জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল জার্মানি। বার্লিনসহ আশ্রয়দানকারী অন্যান্য দেশের সরকার যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার কথা জানালেও অস্ট্রিয়া শিগগিরই শরণার্থীদের সিরিয়ায় ফেরত পাঠানোর ইঙ্গিত দিয়েছে।
এদিকে অভিবাসনবিরোধী কট্টর ডানপন্থি রাজনীতিবিদরা বিভিন্ন দেশে অনুরূপ দাবি জানিয়েছেন।
জার্মানির অভিবাসনবিরোধী দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানির নেত্রী অ্যালিস ওয়েইডেল রবিবার আল-আসাদের পতনে উল্লসিত সিরীয়দের বিক্ষোভকে তুচ্ছজ্ঞান করে বলেছেন, যারা জার্মানিতে বসে স্বাধীন সিরিয়ার আনন্দ উদযাপন করছে, তাদের পালানোর আর কোনো কারণ নেই। তারা এখনই সিরিয়ায় ফিরে যাক। তবে জার্মানির ফেডারেল ফরেন অফিসের এক মুখপাত্র বলেছেন, দুঃখজনক হলেও সত্য, আসাদের পতন শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দেয় না। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আশ্রয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত স্থগিতের সমালোচনা করে বলেছে, সিরিয়ার মানবাধিকার পরিস্থিতি এখনো সম্পূর্ণ অনিশ্চিত।
"