জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দুপক্ষের সংঘর্ষে নওগাঁর ধামইরহাটে ১ জন নিহত ও ৭ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া সরকারি খাস জমি ও মাজার নিয়ে বিরোধে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ধামইরহাট (নওগাঁ) : নওগাঁর ধামইরহাটে প্রতিপক্ষের হামলায় আতোয়ার হোসেন (৬০) নামে ১ জন কৃষক মারা গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলার আড়ানগর ইউনিয়নের অন্তর্গত বল্লা গ্রামের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। আতোয়ার রহমান একই এলাকার মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় মারত্মক আহত হয়েছেন ৭ জন। আহতরা হলেন- একই এলাকার মোজাম্মেল হক, বাবুল হোসেন, মামুন রেজা, মাহফুজা বেগম, আবেজ উদ্দিন, সাখাওয়াত হোসেন ও আবু তাহের। মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আড়ানগর ইউনিয়নের বল্লা মৌজায় ৪৩ শতাংশ জমি নিয়ে ওই এলাকার আনোয়ার হোসেন এবং মৃত আছির উদ্দিন মন্ডলের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ছিল। ওই জমিতে আনোয়ার হোসেন সরিষা বুনতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে শাহজাহান আলী সাগর ও নুর আলম বেলাল আছির উদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে আতোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলেই নিহত এবং ৭ জন গুরুত্বর আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। আহত ২ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ধামইরহাট থানার ওসি মো. রাইসুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সোনাপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ১৬ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহতরা হলেন- আব্দুল বাছিত (৪৫), আবদুস সালাম (৬০), জালাল উদ্দিন (৫১), তোফাজ্জল মিয়া (৪০), এটিএম আছির উদ্দিন (৪৬), রিয়াজন বেগম (৫০), আবদুল হামিদ (৪০), মওলা মিয়া (৬৫), ফনি বেগম (২৬), জুলেখা বেগম (২৫), জালাল উদ্দিন (৭০), ইয়াছমিন বেগম (৩৫), লিলু মিয়া (৪০), কুটি বিবি (৬০), মামুন মিয়া (২৬) ও আবদুল মন্নান (৫৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- সোনাপুর গ্রামে সরকারি খাস জমি ও মাজার নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম উদ্দিন এবং আবদুল মালিক-জাকির মিয়ার লোকজনের মধ্যে পূর্ব বিরোধ চলে আসছিল। মাজারের বিরোধটি স্থানীয় বিচার-শালিসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়। তবে সম্প্রতি সরকারি খাস জমি নিয়ে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি মীমাংসার জন্য শালিস-বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উভয়পক্ষ বিচার না মেনে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন- শালিস-বিচার না মেনে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

"