সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরায় জামায়াত আমির
যেভাবেই উসকানি দিক আমরা ফাঁদে পা দেব না
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। ইনসাফ কায়েম করতে চাই। যেখানে মানুষ চাইলেও অধিকার পাবে, না চাইলেও অধিকার পাবে।
গতকাল শনিবার বিকেলে সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শফিকুর রহমান বলেন, শিক্ষা পেয়ে সবাই যেন মানুষ হয়। শিক্ষা নিয়ে যেন কেউ ডাকাত না হয় এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা আমরা গড়ে তুলতে চাই।
জামায়াতের আমির বলেন, মা-বোনরা ঘরে সুরক্ষিত থাকবে, কর্মস্থলেও সুরক্ষিত থাকবে। তাদের দিকে কেউ চোখ তুলে তাকাতে পারবে না। আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয় যে, আমরা ক্ষমতায় এলে নারীদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। কিন্তু কথা দিচ্ছি এমন হবে না। তিনি বলেন, মহানবী (সা.) সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ কাজেও নারীদের যুক্ত করেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে নারীদের যুক্ত করেছেন। তাই আমরা তাদের আটকে রাখার কেন তারা সামর্থ্য অনুযায়ী দেশের জন্য আত্মনিয়োগ করবে। তাদের পোশাক নিয়ে আমরা বাড়াবাড়ি করব না। তারা ইচ্ছামতো পোশাক পরতে পারবে। আমরা এমন একটি দেশ চাই যেখানে মসজিদ, মন্দির, মঠ, গির্জা কোনো কিছুই পাহারা দেওয়া লাগবে না উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের দেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চমৎকার বাগান। এই বাগানে মাঝে মধ্যে হুতুমপেঁচা ঢুকে পড়ে। এদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।
একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীও ‘ভিআইপি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা তিন দিন পরিষ্কার না করলে আমরা ঘর থেকে বের হতে পারব না। তাই তাদেরও মর্যাদা দিতে হবে। সেই সম্প্রীতির বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই। আমরা জাতীয় স্বার্থে দল ও ধর্মের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করতে চাই। এই দেশকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশ বানাতে চাই। কিন্তু আকা?শে শকুন ঘুরছে। এই শকুন মাঝে মাঝে ছোঁ মারার অপচেষ্টা করছে। তাই সতর্ক থাকতে হবে। যে যেভাবেই উসকানি দিক, আমরা ফাঁদে পা দেব না। তিনি বলেন, কোরআন, দ্বীন ও মজলুমের কথা বলতে গিয়ে সারা দেশে যত মানুষ প্রাণ দেননি, তার চেয়ে বেশি প্রাণ দিয়েছে সাতক্ষীরার মানুষ। তাই জামায়াতের কাছে সাতক্ষীরার অবস্থান অনন্য উচ্চতায়।
জামায়াতের আমির বলেন, আমাদের দেশে অফুরন্ত সম্পদ। কিন্তু তা কাজে আসছে না। যারাই ত্রাতার দায়িত্বে থাকে, তারাই পকেট ভরে। বিগত সরকার সাতক্ষীরার মানুষের ওপর জুলুম করেছে। খুন করেছে, গুম করেছে। জনগণের অধিকার দেয়নি। তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে খুন করেছে। জামায়াতের দুজন আমিরসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশকে খুনের বন্যায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। শত জুলুম অত্যাচারের পরও আমরা পালিয়ে যাইনি। দেশকে যারা ভালোবাসে তারা পালাতে পারে না। আমরা এই দেশকে গড়তে চাই। এই দেশের এক ইঞ্চি মাটিও আমরা ছাড়ব না। সম্মেলনে জেলা জামায়াতের আমির শহিদুল ইসলাম মুকুলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জতউল্লাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মুহাদ্দিস রবিউল বাসার, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম ও জেলা সেক্রেটারি গাজী আজিজুর রহমান ।
"