নিজস্ব প্রতিবেদক
সফল উদ্যোক্তা
ম্যাটাডোর প্রতিষ্ঠাতা শাহ আলমের চিন্তায় এখন মানবসেবা
দেশে প্রথম সারির একজন শিল্পোদ্যোক্তা ও সফল ব্যবসায়ী অ্যাডভোকেট মো. শাহ আলম। পুরান ঢাকার এ কৃতিসন্তান শাহ আলম উকিল নামেই বেশি পরিচিত। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি। দীর্ঘ ২৫ বছর আইনি পেশায় থাকার পাশাপাশি শুরু করেছিলেন ব্যবসা। সেই ব্যবসায়ও সফল তিনি। তার প্রতিষ্ঠিত ম্যাটাডোর কোম্পানি পৌঁছেছে এক অনন্য উচ্চতায়। প্রতিষ্ঠানটিতে এখন কর্মরত রয়েছেন প্রায় ৪ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। ব্যবসা জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে উদারপন্থি জাতীয়তাবাদী চিন্তা-চেতনার শাহ আলম মন দিয়েছেন সমাজসেবায়।
পুরান ঢাকায় জনহিতৈষী ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে সুপরিচিত এমন একজন সফল উদ্যোক্তার সাধারণ জীবনযাপনে উজ্জীবিত হয়ে তার সঙ্গে আড্ডা দিয়েছেন গণমাধ্যমের কর্মীরা। জীবন সায়াহ্নে এসে নিজের চাওয়া-পাওয়া ও সফলতা-ব্যর্থতার গল্প শুনিয়েছেন সাংবাদিকদের। ম্যাটাডোর কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শাহ আলম বলেন, ১৯৮০ সালে ম্যাটাডোর কলম দিয়ে ব্যবসায়িক জগতে পা রাখি। তারপর থেকেই আমি ও আমার শ্রমিকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ম্যাটাডোর গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ বর্তমানে দেশে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠান। স্টেশনারি, ব্যক্তিগত পরিচর্যা পন্য, খাদ্যপন্য, নির্মাণসামগ্রী, প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী, বিনোদন এবং স্বাস্থ্যসেবা বা হাসপাতালসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি।
শাহ আলম বলেন, আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষ হিসেবে যা করার আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। এলাকাবাসীর জন্য ভালো কিছু করে যেতে চেয়েছি। আমি জানামতে এলাকাবাসী এবং আমার স্বজনদের মঙ্গল কামনা ছাড়া কোনোদিন অমঙ্গল কামনা করিনি। আর আমি যা করতে পারিনি, আমার সন্তানরা তা করবে- এটাই আল্লাহর কাছে দোয়া কামনা করছি। ম্যাটাডোরের কর্মচারীদের নিয়ে ভাবনা প্রসঙ্গে শাহ আলম বলেন, ম্যাটাডোর আমার যৌবনের প্রথম উদ্যোগ। এ উদ্যোগের কারণেই আজ আমি মানুষের উপকার করতে পারছি। সুতরাং এখানকার কর্মচারীদের বসবাসের জন্য কোয়ার্টার, তাদের সন্তানদের জন্য আর্থিক সহায়তা, শিক্ষাবৃত্তি ও বেকারত্ব দূর করেছি। তাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেছি ম্যাটাডোর হাসপাতাল।
জনহিতৈষী শাহ আলম বলেন, এলাকায় রফিকুল ইসলাম মোল্লা মাদরাসা এবং মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ করেছি। হাজারীবাগ বোরহানপুর জামে মসজিদ তৈরি করেছি সৌদি আরবের মসজিদের আদলে। এছাড়া কাজিরবাগ মসজিদ মাদরাসা, আজিম উদ্দিন হুজুরের এতিমখানা, ম্যাটাডোর স্টাফ কোয়ার্টার মসজিদ, চাঁদপুর হাজিগঞ্জ জয়সারা চৌধুরী বাড়ি মসজিদ, মাদরাসাসহ এতিমখানায় আমি সাধ্যমতো দান করি। ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের অনেক মসজিদ ও মাদরাসা নির্মাণে অর্থ সহায়তা দিয়েছ। এছাড়া সিলেট, হবিগঞ্জ জেলায় নির্মিত মসজিদ ছাড়াও সারা দেশের শত শত মাদরাসা, এতিমখানা ও মসজিদে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। এসব কাজের বাইরেও নিজের আত্মার তৃপ্তির জন্য অসচ্ছল বেশকিছু মানুষকে হজ করিয়েছি।
রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার কোনো আগ্রহ আছে কি না- জানতে চাইলে এ সমাজসেবক বলেন, আমি একজন আইনজীবী ও ব্যবসায়ী। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় বলত আমি তাদের লোক, আওয়ামী লীগের সময় বলত আমি তাদের লোক। কিন্তু আমি কোনো দলকেই কখনো সরাসরি সমর্থন করিনি। আমার সন্তানরাও তাই। আমার একটাই দল, আমি মুসলিম, আমি আল্লাহর লোক। পেশায় আমি আইনজীবী ও ব্যবসায়ী। পেশার মাধ্যমে যদি আমি মানুষের উপকারে আসি, তার চেয়ে বড় তৃপ্তির আর কিছুনি।
নিজের কর্মজীবনের শুরুর লড়াই সম্পর্কে তিনি বলেন, কর্মজীবনের শুরুতে স্বাভাবিকভাবেই একটি যুদ্ধ করতে হয়েছে। দিন-রাত পরিশ্রমের পর দাঁড়িয়েছে একটার পর একটা প্রতিষ্ঠান। সঠিক প্রচেষ্টায় পেয়েছি আর্থিক সচ্ছলতা। নিজের পরিবার সম্পর্কে বলেন, ব্যবসা সামলানোর পাশাপাশি আমার সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করতে হয়েছে। পরিবারের বাইরে সাধারণ মানুষের জন্যও ভালোকিছু করতে চেয়েছি, যার সবটুকুই দৃশ্যমান। আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি।
"