নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

ঢাকায় জিকা ভাইরাসের ৮ রোগী শনাক্ত

রাজধানী ঢাকায় এডিস মশাবাহিত জিকা ভাইরাস রোগী পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। গত তিন মাসে ঢাকায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত অন্তত ৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আইইডিসিআরের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. নওশের আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ডা. নওশের বলেন, ১৫৫টি নমুনা পরীক্ষা করে আটজনের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। তারা সবাই ঢাকার বাসিন্দা। এর মধ্যে দুজন উত্তরার বাসিন্দা। এছাড়া মহাখালী, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, শ্যামলী, বারিধারা ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একজন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তরা চিকিৎসা নিয়ে পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে বাসায় অবস্থান করছেন। তাদের কারো দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো ইতিহাস নেই। তার মানে সংক্রমণটা দেশের ভেতরেই হয়েছে। গত বছরও পাঁচজনের জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। ২০১৪ সালে প্রথম দেশে জিকা ভাইরাসের রোগী পাওয়া যায়। এজন্য রোগটি নতুন কিছু না। কিন্তু যেহেতু পরীক্ষা করা হয় না তাই এটি শনাক্তও হয় না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাস সংক্রমণ হলে শিশুর জন্মগত রোগ মাইক্রোসেফালি অর্থাৎ মস্তিষ্ক ও মাথার আকার তুলনামূলক ছোট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে স্নায়ুর অবসজনিত গুলেন বারি সিনড্রোম হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

বিএসএমএমইউর উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, গর্ভবতী অবস্থায় জিকা হলে সন্তানের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। এই রোগ এডিস মশাবাহিত হলেও সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ (এসটিডি) হওয়ায় যৌন ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে স্বামীরও হতে পারে। বাংলাদেশে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এই মুহূর্তে না থাকলেও ভবিষ্যতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সতর্ক থাকতে হবে। জিকা ভাইরাস, ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত সব রোগ থেকে বাঁচতে মশা নিধনের বিকল্প নেই।

৮০ শতাংশ রোগীর উপসর্গ পাওয়া যায় না : আইইডিসিআর তথ্য বলছে, সাধারণত শতকরা ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে জিকা ভাইরাস আক্রান্ত মানুষের মধ্যে এই রোগের কোনো লক্ষণ প্রকাশিত হয় না। অন্যান্য ক্ষেত্রে, আক্রান্ত হওয়ার ৩ থেকে ১২ দিনের মধ্যে উপসর্গগুলো দেখা যায় এবং সেগুলো ২-৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। অধিকাংশ সময় এ রোগটি নিজে নিজে ভালো হয়ে যায়।

বিদেশে ভ্রমণের ১৪ দিনের মধ্যে স্বল্প মাত্রার জ্বর অথবা চামড়ায় লালচে দানার মতো ছোপ (র‌্যাশ) এবং এর সঙ্গে মাথা ব্যথা, চোখ লাল হওয়া (চোখের প্রদাহ), মাংসপেশিতে ব্যথা, গিটে গিটে ব্যথা এর মতো যেকোনো একটি উপসর্গ দেখা দিলে জিকা ভাইরাসে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।

আইইডিসিআর বলছে, জিকা ভাইরাস সংক্রমণের প্রতিষেধক টিকা এখনো আবিষ্কার হয়নি। ব্যক্তিগত সচেতনতাই জিকা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের প্রধান উপায়। তাই মশার কামড় থেকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। গর্ভকালীন সময়ে জিকা আক্রান্ত দেশগুলো ভ্রমণ থেকে বিরত থাকাই বাঞ্ছনীয়। আর ভ্রমণ করলেও অবশ্যই মশার কামড় থেকে সুরক্ষিত থাকার নিয়মাবলি মেনে চলতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close